Category Uncategorized

বাঙালি মুসলমানদের ‘স্বাধীনতা’

সাঈদ তারেক প্রতিবেশী দেশে ধর্মভিত্তিক রাজনীতির উত্থানের প্রেক্ষাপটে ‘বা্ঙালি মুসলমান’ কথাটা আবার নতুন করে উঠে এসেছে। কতটা সমীচিন কতটা উচিত অনুচিত সে বিতর্ক ছাপিয়ে বাস্তবতা হচ্ছে নানা মহলে এ নিয়ে কানাঘুষা ফিসফাস আলোচনা সমালোচনা থেমে নেই। সোস্যাল মিডিয়ায় ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় নানা মত হতাশা ক্ষোভ। কেউ বলবেন ‘বা্ঙালি তো ‘বা্ঙালিই, তাকে আবার হিন্দু মুসলমান বলে ভাগ করা কেন। না, জাতিগতভাবে কোন বিভক্তি নেই। তবে ধর্মবিশ্বাষের ভিত্তিতে এমন একটা পরিচয় তো আছেই। এটা বাস্তবতা। এই বাস্তবতা কখনও কখনও প্রকট হয়ে ওঠে যখন সমাজে বৈষম্যের সৃস্টি হয়। এই বাস্তবতার প্রেক্ষিতে আমি কিছুটা আলোচনা করার চেষ্টা করেছি বাঙালির জাতিগত ও ধর্মভিত্তিক পরিচয়ের উদ্ভব এবং বিকাশের। তাদের গড়ে ওঠা স্ব-অধীনতা এবং হাজার বছরের পথচলার। ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় বঙ্গ বাঙালা বা প্রাচীন চায়নীজ পূঁথিসাহিত্যে উল্লেখিত মাঙ্কালা অঞ্চলের ইতিহাস অনেক পুরনো হলেও বঙ্গ রাজ্য গঠনের শুরু মাত্র হাজার বছর আগে। আজকের যে বাংলাদেশ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ মিলে বৃহত্তর বাংলা- গোড়াতে এটা কোন একক দেশ বা এক রাজ্য ছিল না। অঙ্গ বঙ্গ সমতট হরিকেল পুন্ড্রবর্ধন তিরাভুক্তি রাধা প্রাগজোতিষি গঙ্গার্দী সুহমা- প্রভৃতি অঞ্চল ভিন্ন ভিন্ন রাজা বা শাষকরা শাষন করতেন। এদের মধ্যে প্রতিযোগীতা ছিল, রাজায় রাজায় যুদ্ধ হতো, এক রাজা অন্য রাজ্য দখল করে নিতো। সপ্তম শতকে রাজা শশাঙ্ক এই রাজ্যগুলোকে একীভূত করে গৌড়িয় সাম্রাজ্য গঠনের মাধ্যমে বৃহত্তর বাংলা রাজ্যের গোড়াপত্তন করেন। রাজা শশাঙ্কের মৃত্যুর পর গোটা দেশে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃস্টি হয়। উদ্ভব ঘটে গৌড়িয় পাল সাম্রাজ্যের। কিন্তু…

বিপজ্জনক সময়ের সামনে বাংলাদেশের গণতন্ত্র

ডক্টর জিওফ্রে ম্যাকডোনাল্ড জানুয়ারির সংসদীয় নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ একটি ‘একদলের আধিপত্যবাদী রাজনৈতিক ব্যবস্থা’র দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। বিরোধীরা নির্বাচন বয়কট করলেও, ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ আরও পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতা নিশ্চিত করেছে। এর ফলে শেখ হাসিনা শিগগিরই সমসাময়িক ইতিহাসের সবথেকে দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা নারী সরকার প্রধান হয়ে উঠবেন। কিন্তু এমন রাজনৈতিক আধিপত্যের ঝুঁকিও রয়েছে। সারা বিশ্বেই এই এক দলের আধিপত্যবাদী রাজনৈতিক ব্যবস্থা প্রায়ই এমন সব রোগের বিকাশ ঘটায়, যা দেশের শাসনব্যবস্থার ক্ষতি করে। তবে রাজনীতি, সরকার এবং অর্থনীতিতে প্রতিযোগিতা এই সমস্যাগুলি প্রতিরোধ করতে পারে।বাংলাদেশের এক দলের আধিপত্যবাদী ব্যবস্থাযদিও এই এক দলের আধিপত্যবাদী ব্যবস্থার কোনো নির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই। তবে এটিকে এমন একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসাবে বর্ণনা করা যেতে পারে, যেখানে একটি নির্দিষ্ট দল বড় একটি সময়ের জন্য রাজনীতি, সংসদ, সরকার এবং নীতিনির্ধারণে আধিপত্য বিস্তার করে। ৭ই জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টানা চতুর্থ জয়ের নেতৃত্বে ছিলেন শেখ হাসিনা। যদিও আওয়ামী লীগ এখন ২০১৮ সালের নির্বাচনের চেয়ে কম সংসদীয় আসন দখল করে আছে, তবে এর রাজনৈতিক আধিপত্য আসলে অনেক বেশি।গত তিনটি সাধারণ নির্বাচনের মধ্যে এবারেরটিসহ মোট দুটি নির্বাচন বয়কট করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি)। নির্বাচনে বিএনপি সদস্যদের যোগদানে প্ররোচিত করতে এবং পার্লামেন্টে আওয়ামী লীগ ছাড়াও অন্য ব্যানারের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে কিছু আসনে তার সদস্যদের দলের বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র হিসাবে নির্বাচনে দাঁড়ানোর নির্দেশ দিয়েছিলো আওয়ামী লীগ।ফলস্বরূপ নির্বাচনে কিছু সত্যিকারের প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা গেছে, বিশেষ করে স্বতন্ত্র এবং আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থীদের…

কুয়াশা ফিরিয়ে দিল বিমান ফোবিয়া

শাকিল রিয়াজ এয়ারওয়েজের টিকেট কাটা ছিল ইকোনমি ক্লাসের। প্লেনে বোর্ডিং করার সময় ডেস্কের মেয়েটি বললো, স্যার আপনার টিকেট আপগ্রেড করে দেয়ার নোট এসেছে। আপনি বিজনেস ক্লাসে ভ্রমণ করবেন। কোনও বাড়তি খরচ ছাড়াই। আমি অবাক হলাম। বিজনেস ক্লাসের টিকেটের দাম ইকোনমি ক্লাসের পাঁচ গুণ বেশি। স্টকহোম-ঢাকা ইকোনমি ক্লাসের দাম যদি ১২ হাজার ক্রাউন (১ লাখ ৩০ হাজার টাকা) হয় তবে বিজনেসের দাম প্রায় ৬০ হাজার ক্রাউন। জিজ্ঞাসা করলাম কেন এই বাড়তি সুবিধা। কম্পিউটারে আরেকবার চোখ বুলিয়ে জানালো, ২০ বছর ধরে আপনি কাতার এয়ারওয়েজের প্রিভিলেজ ক্লাবের মেম্বার। অনেক কিউ-মাইল এবং পয়েন্ট জমা আছে। এসব সহ আরো যেন কী কী বললো। শেষে জানালো, আমাদের বিজনেস ক্লাবের সিট খালি থাকলে এভাবে আমরা কাউকে কাউকে পিক করি যাদের সঙ্গে আমাদের আস্থার সম্পর্ক রয়েছে। অফিসারকে ধন্যবাদ জানিয়ে আপগ্রেডেড বোর্ডিং কার্ড নিয়ে প্লেনে উঠলাম। খরচ অনেক বেশি বলে জীবনে মাত্র ২/৩ বার বিজনেসে ভ্রমণ করেছি। তাও নিজের ইচ্ছায় নয়, অন্যের ইচ্ছায় বা বাধ্য হয়ে। এবারের বাইরে আরও একবার ফাও ভ্রমণ করেছি বিজনেসে। সেবার ব্যাংকক থেকে স্টকহোমের পথে থাই এয়ারওয়েজ আমাকে ইকোনমি থেকে “তুলে” বিজনেসে সরিয়ে নেয় “চোখে চোখে” রাখার জন্য। শাপেবর হওয়া এই ঘটনার পেছনে ছিল বাংলাদেশের এক অসৎ ইমিগ্রেশন কর্তা। আমার যাত্রার শুরু ছিল ঢাকা। ঘুষ চেয়ে না পেয়ে নোট দিয়েছিল আমার ভিসা হয়তো প্রকৃত ভিসা নয় এই বলে। ব্যাংকক থেকে প্লেন ছাড়ার পরপরই এক অফিসার এসে আমাকে বিজনেস ক্লাসে নিয়ে যায় এবং পাসপোর্টটি নিজের কাছে…

একজন একনায়কের সঙ্গে বিমান ভ্রমণ

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু আমার সাত দশকের জীবনে চার জন সামরিক একনায়ক কর্তৃক শাসিত হয়েছি: — জেনারেল ফিল্ড মার্শাল মোহাম্মদ আইয়ুব খান, জেনারেল আগা মোহাম্মদ ইয়াহিয়া খান, লেফটেন্যান্ট জেনারেল জিয়াউর রহমান এবং লেফটেন্যান্ট জেনারেল হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। শেষোক্ত দুই একনায়ককে দেখার ও তাদের সঙ্গে করমর্দনের এবং সর্বশেষ জনের সঙ্গে সংক্ষিপ্ত বিমান ভ্রমণের ও তিনি ক্ষমতার গগন থেকে ছিটকে পড়ার পর তার সঙ্গে আমার দীর্ঘ আলাপচারিতার সুযোগ হয়েছে। ব্যক্তিত্ব, শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার দিক থেকে চারজনের জনের মধ্যে কোনো মিল ছিল না। জেনারেল মোহাম্মদ আইয়ুব খান আলীগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। তিনি ব্রিটিশ রয়েল মিলিটারি কলেজ, স্যান্ডহার্স্টের ক্যাডেট ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বার্মা-আসাম ফ্রন্টে জাপানি বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছেন। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় তিনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জেনারেল ইয়াহিয়া খান অবিভক্ত ভারতে দেরাদুনে কর্নেল ব্রাউন কেমব্রিজ স্কুল ও পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ইরাক, ইটালি ও উত্তর আফ্রিকায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৪২ সালে মুসোলিনীর নেতৃত্বাধীন ইটালির বাহিনীর হাতে বন্দি হয়ে যুদ্ধবন্দি শিবিরে আটক থাকাকালে তৃতীয় প্রচেষ্টায় তিনি পালাতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনি ১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধে তিনি ভারতের বিরুদ্ধে কাশ্মিরে পাকিস্তান সেনাবাহিনী পরিচালনা করেন। লেফটেন্যান্ট জিয়াউর রহমান করাচির একাডেমি স্কুলে এবং ডি,জে সিন্ধ গভর্নমেন্ট সায়েন্স কলেজে পড়াশোনার পর পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে খেমকারান সেক্টরে ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে বীরত্ব প্রদর্শন করায় পাকিস্তানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সামরিক পদক “হিলাল-ই-জু’রাত”, তিনটি “সিতারা-ই-জু’রাত” ও আটটি “তমঘা-ই-জু’রাত” পদক লাভ করেন। ১৯৭১ সালের…

সূর্যের মতো উজ্জ্বল তরবারির মতো শানিত

মূল: অনিতা আমিরেজওয়ানি অনুবাদ: আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু [ইরানের সাফাভি রাজবংশের প্রথম পর্যায়ের ইতিহাসের আলোকে লেখা অনিতা আমিরেজওয়ানির উপন্যাস ‘ইক্যুয়াল অফ দ্যা সান’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ। সাফাভি রাজবংশের (স্থায়িত্ব: ১৫০১-১৭২২) অন্যতম সম্রাট তাহমাস শাহের (১৫১৪-১৫৭৬) কন্যা শাহজাদি পারী খান খানুম ১৫৪৮ সাল থেকে ১৫৭৮ সাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তিনি তাঁর সৎ ভাই ইসমাইল শাহকে বিষয় প্রয়োগে হত্যা করেছিলেন বলে সমসাময়িক ইতিহাসবিদরা উল্লেখ করেছেন। তাঁর মৃত্যুর কয়েক মাস পর পারীকে তাঁর সৎ ভাই মোহাম্মদ শাহ ও তাঁর স্ত্রী মাহদ-এ-ওলিয়া’র আদেশে হত্যা করা হয়। পারীর মৃত্যুর পর মাহদ-এ-ওলিয়া ইরানের কার্যত শাসকে পরিণত হন এবং দেড় বছর পর তিনিও নিহত হন। ] শাহজাদি পারী খানম চৌদ্দ বছর বয়সেই তেজস্বী, উদারতার গুণসম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি তীরন্দাজীসহ যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী হয়ে ওঠেছিলেন। তিনি ইরান শাহের বিশ্বস্ত পরামর্শকে পরিণত হন। তাঁর মাঝে কবি প্রতিভাও ছিল, কথার জাদুতে তিনি সকলকে মুগ্ধ করতে পারতেন। মহান এক রাজবংশে তাঁর জন্ম, যে বংশে বহু সাহসী নারীর জন্ম হয়েছে। তাঁর দাদি তাজলু খানুম মোসেলু, তাঁর দশ বছর বয়সী পুত্র তাহমাসকে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করতে ভূমিকা রেখেছেন এবং ফুফু মাহিন বানু আমৃত্যু শাহ আহমাসকে পরামর্শ দিয়েছেন। চৌদ্দ বছর বয়সে পারী তাঁর ফুফুর স্থলে পিতা তাহমাসকে পরামর্শ দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন এবং পরবর্তী চৌদ্দ বছরে পিতার মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন তাঁর সকল সৎমাকে পেছনে ফেলে। পারীর তৎপরতা তাঁর বংশের সকল নারীর ভূমিকাকে ম্লান করে দিয়েছিল, কারণ তাঁর সাহসিকতার সীমা পরিসীমা ছিল না। শাহজাদি পরীর…

রবীন্দ্র মানসে সুফি প্রভাব

মুসা আল হাফিজ কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের (১৮৬১-১৯৪১)  আধ্যাত্মিকতার মূলে আছে বিশ্ব নিয়ন্তার প্রতি বিশ্বাস। “সীমার মাঝে অসীম তুমি/বাজাও আপন সুর/আমার মধ্যে তোমার প্রকাশ/ তাই এত মধুর।” এখানে ক্রিয়াশীল ছিলো  জোড়াসাকুর ঠাকুর পরিবারের ভাব-সাধনা,  ফার্সি কাব্য সংযোগ, উপনিষদ এবং  ব্রাহ্ম সমাজ ও রাজা   রামমোহন রায়ের (১৭৭২- ১৮৩৩) প্রভাব ।  রবীন্দ্র মনে আধ্যাত্মিক যে বোধ  তৈরি হয়, তা ব্রাহ্মমতের সঙ্গে মিলিয়ে নিয়েছিলো  বৈদিক মন্ত্রের আত্মাকে । কিন্তু  বৈদিক আচারের উপর প্রাধান্য দিয়েছিলো বেদান্তবাদী হৃদয়ের ধর্মকে। “বৃথা আচার বিচার। সমাজের চেয়ে হৃদয়ের নিত্য ধর্ম সত্য চিরদিন।” হৃদয়ের ধর্মের অন্বেষা  পরম সত্তা। যিনি সব মানুষের হৃদয়ে মহত্ত্বের ও শ্রেয়োবোধের প্রেরণা দিচ্ছেন। চিত্রার ‘এবার ফিরাও মোরে’ কবিতায় তার পরিচয় আছে। “কে সে? জানি না কে? চিনি নাই তারে শুধু এইটুকু জানি তারি লাগি রাত্রি-অন্ধকারে চলেছে মানবযাত্রী যুগ হতে যুগান্তর-পানে ঝড়ঝঞ্ঝা বজ্রপাতে জ্বালায়ে ধরিয়া সাবধানে অন্তরপ্রদীপখানি …।” রবীন্দ্রনাথের মরমিতা গভীরভাবে উজ্জীবিত ও বিনির্মিত ছিলো ফারসি ও হিন্দি কবিতার সুফি ভাবরসে। শেখ সাদী  (১২১০-১২৯১) হাফিজ (মৃত্যু :  ১৩৮৯) বা  রুমি (১২০৭Ñ  ১২৭৩) প্রতিধ্বনিত হয়েছেন রবীন্দ্রনাথের কবিতায় কবিতায়।   সুফিবাদর মন, তার  অপার্থিব মিলন-তিয়াস এবং  পরমানন্দময় ভাবাবেশের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ কতো গভীরভাবে একাত্ম ছিলেন, তার বিবৃতি নিজেই দিয়েছেন  পারস্য যাত্রী সফরনামায়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্বপুরুষ ফারসি ভাষার বন্ধনে যুক্ত ছিলেন হাফিজ-রুমিদের অধ্যয়নে। বাংলার সম্ভ্রান্ত পরিবারগুলোতে বাংলার সাথে ফারসি চর্চা হতো অষ্টাদশ শতকে, এমনকি ঊনিশ শতকের গোড়ার দিকেও। মুসলমান কবিগণ তো বটেই, হিন্দু কবি ও শিক্ষিত শ্রেনি ফারসিকে উপেক্ষা করতেন না। ভারতচন্দ্র…

কবিতা

তুমি আছো বধির মাহবুব হাসান শীত-বাতাসের কামড়ে ঝরছে গাছের পাতা দিনগুলো ঘোলা আর শিশার মতো শিরশিরে ভয় আমাকে গেঁথে ফেলে শিক-কাবাবের মতো ঝলসে দেয়, শুধু আমাকেই? না, তোমাকেও গাঁথে? ক্ষমতার শিরে বসে তুমি শীতার্ত, ক্ষুধার্ত, ঘরহীন মানুষেরে তুমি বোঝো? বোঝো?? বোঝো??? তুমি তো নিঘর এক, সুদূরের কেউ একজন,তোমাকে চেনে না কেউ, তবু তোমার আশায় দিন কাটায়, রাত উজাড় কওে দেয়! কে তোমাকে পায়? কে জিগাতে পারে তার কষ্টের কথা তোমার কাছে? কে তার ক্ষুধার যন্ত্রণার সেরেনাদ শোনাতে পারে? কে পারে বলতে এই আসন্ন বরফ-কালের ভেজা পরিবেশে তার নিঘর জীবনের আর্তির শ্বাস কতো কষ্টের হোলিতে গাঁথা? তোমার কর্ণ গহ্বর আছে, কিন্তু সেখানে গরিব মানুষের চিৎকার পশে না। তোমার চোখ আছে, কিন্তু সেখানে কোনো দৃষ্টি নেই। তোমার আনন্দ বোধ আছে,হাস্যরস তৈরির ক্ষমতাও আছে, কিন্তু নেই সেখানে মানুষের জন্য অবাক করা ভালোবাসা। তোমার হৃদয় আছে, কিন্তু সেখানে নেই কিছু অনুভূতির তার, যাতে বাজতে পারে গরিব মানুষের বেদনার ধ্বনিপুঞ্জ আলাউদ্দিন খাঁ’র সেতারের মতো অনর্গল, আর তুমি, ওই যে নীলাকাশের মতোই পরাবাস্তবতার নিখিলে বসে শুধু দেখো মানুষের অধঃপতনের কারুকলা! তোমার ষোলকলা পূর্ণ হবে কবে? সনেটের দিন রেজাউদ্দিন স্টালিন  সনেটের দিন শেষ-কার তবে শুরু; সোনালি মোড়কে পেলে-নতুনের স্বাদ কিছুটা মিলবে,বোধে ছড়াবে অগুরু। পাঠক খু্ঁজবে ছন্দে আছে নাকি খাদ? অক্ষরবৃত্তের কাছে স্বরবৃত্ত শিশু, মাত্রাবৃত্ত শ্রম দেয় কুলিনের ঘরে। মুক্তছন্দ কি উদার ক্ষমাশীল যিশু- তাকেই আঁকড়ে আছিবাহিরে অন্তরে। আমরা কোথায় যাবো হাভাতে বর্ণের কতটুকু আঁকা যায়- আকালের ছবি?…

বাতাস যখন ভয়ঙ্কর

মিলন কিবরিয়া এমনটা হয় আমাদের। কোন কোন বিষয় আমাদের জীবনে এতোটাই স্বাভাবিক আর নিয়মিত যে তার গুরুত্ব আলাদা ভাবে টের পাই না। এই যেমন বাতাস। বাতাস আমরা না দেখতে পাই, না ধরতে পারি। অথচ বাতাসের সমুদ্রে আমাদের বসবাস, আমাদের বেঁচে থাকা। বাতাস নেই মানে আমি নেই, তুমি নেই, আমরা নেই। প্রাণের অস্তিত্ব নেই। বাতাসে আছে আমাদের জীবনের জ্বালানি অক্সিজেন। এই কোভিড সময়ে আমরা দেখেছি অক্সিজেন আমাদের কী ভাবে বাঁচিয়ে রাখে! বাতাস নাক-মুখ দিয়ে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। শ্বাস তন্ত্রের বিভিন্ন নালি পেরিয়ে পৌছে যায় আমাদের ফুসফুসে। সেখানে আছে প্রায় ৬০০ থেকে ৮০০ মিলিয়ন ছোট ছোট বায়ু থলি। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই বায়ু থলির নাম অ্যালভিওলাস (Alveolus, বহু বচনে Alveoli)। এই বায়ু থলিগুলোর দেয়াল খুবই সূক্ষ, বাতাস এই বায়ু থলি থেকে রক্তে পৌঁছে যায় অনায়াসে আর তার মাধ্যমে সারা দেহে।  এই পুরো ব্যবস্থাপনা আমাদের সুস্থ থাকার, ভালো ভাবে বেঁচে থাকার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি আমাদের অসুস্থতার কারণ হয়। অনেক সময় এই বায়ু থলি ফুটা হয়ে যায়। ফলে বায়ু থলির বাতাস ফুসফুস থেকে বের হয়ে আমাদের বুকের ভিতরে জমা হয়। ফুটা হলে বেলুন যেমন চুপসে যায় তেমনি ফুসফুসও চুপসে যায়, হতে পারে তা পুরোপুরি বা আংশিক। এই চুপসে যাওয়া ফুসফুসে বাতাস থাকে না বা কম থাকে। ফলে শরীরে অক্সিজেনের পরিমাণও যায় কমে। অক্সিজেনের ঘাটতির কারণে আমাদের শ্বাস কষ্ট হয়। চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এই অবস্থার নাম নিউমোথোরাক্স, সহজ বাংলায় বলতে পারি ‘বুকের ভেতর বাতাস জমা হওয়া’। নিউমোথোরাক্সের তীব্রতর ধরণকে বলে ‘টেনশান নিউমোথোরাক্স’ । এই…

বিচিত্র

যুক্তরাষ্ট্রে এক ধর্মীয় নেতার ২০ স্ত্রী অনলাইন ডেস্ক :যুক্তরাষ্ট্রে একজন তথাকথিত ধর্মীয় নেতার ২০ টিরও বেশি স্ত্রী ছিল। তাদের মধ্যে কয়েকজনের বয়স ছিল ১৮ বছরের কম। আদালতে জমা দেওয়া হলফনামায় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) তথ্যের বরাত দিয়ে এ খবর জানায় বিবিসি। এফবিআই জানিয়েছে, স্যামুয়েল রাপেলি বেটম্যান নামের ওই ব্যক্তি ঈশ্বরের ইচ্ছায় তার স্ত্রীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছিলেন বলে দাবি করেন। গত সেপ্টেম্বরে ৪৬ বছর বয়সী বেটম্যানের বিরুদ্ধে নথি নষ্ট করা ও ন্যায়বিচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল।  শিশু যৌন কার্যকলাপের জন্য এফবিআই তাকে তদন্ত করছে। আদালতে জমা দেওয়া এফবিআইয়ের হলফনামায় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। বেটম্যান জেসাস ক্রাইস্ট অফ ল্যাটার-ডে সেন্টস (এফএলডিএস চার্চ) এর মৌলবাদী চার্চের সদস্য। এটি মরমন সম্প্রদায়ের একটি শাখা। পরে বেটম্যান নিজেই আলাদাভাবে একটি অনুসরণ তৈরি করতে শুরু করেন। এফবিআই জানিয়েছে, পুরুষ অনুসারীরা বেটম্যানকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন। এমনকি তারা তাদের স্ত্রী ও কন্যাদেরও তার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেয়। বেটম্যান তার অনুসারীদের কাউকে শাস্তি দিতেন যদি তারা নবীর মতে তাকে উপাসনা না করে। ১১ থেকে ১৪ বছর বয়সী তিনটি মেয়েকে একটি ট্রেলার ট্রাকে নিয়ে যাওয়ার সময় গত আগস্টে বেটম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুচলেকায় জামিন পান তিনি। কিন্তু পরবর্তীতে নথি নষ্ট ও ন্যায়বিচারে বাধার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এই বছরের শুরুতে অ্যারিজোনা চাইল্ড সার্ভিসেস বেটম্যান থেকে নয়টি মেয়েকে উদ্ধার করেছিল। পরে তাদের গ্রুপ হোমে (নিঃস্ব মেয়েদের জন্য বিশেষ আবাসন) রাখা হয়েছিল। কিন্তু নভেম্বরে তাদের আটজন সেখান থেকে পালিয়ে…

Welcome to the Future of WordPress with Gutenberg

Malesuada fames ac turpis egestas integer. Quam nulla porttitor massa id neque aliquam vestibulum morbi blandit. Commodo sed egestas egestas fringilla phasellus faucibus scelerisque. Turpis massa tincidunt dui ut ornare lectus sit amet. Ut consequat semper viverra nam libero justo laoreet sit. Ultrices dui sapien eget mi. At augue eget arcu dictum varius duis at consectetur lorem. Magnis dis parturient montes nascetur ridiculus. Pharetra pharetra massa massa ultricies mi quis hendrerit. Odio ut sem nulla pharetra diam sit amet. Magnis dis parturient montes nascetur ridiculus. Ac turpis egestas integer eget aliquet nibh praesent tristique. Quis vel eros donec ac odio tempor orci. Only a quarter of young adults are financially literate. You don’t want to overwhelm them with terrible advice. Michael Clarck Eos modus intellegam id. Quo in tollit consectetuer, duo tollit assueverit te. Tale debet et eos. Ei recusabo expetendis per, falli nonumes in vix. Per no latine appellantur, te has amet sint nominavi, albucius suscipit voluptatum has at. Has epicuri accusamus intellegebat ad, no qui dicat laoreet scribentur, cum natum salutatus cu. Ne quem suas recusabo nam. Cum at dicunt oblique. Discere veritus detraxit pri ut, sea ei dicunt theophrastus. Eum harum animal debitis cu, viderer vituperatoribus mei ea. Id sed illud facete singulis, reque dolore mediocrem vim ei. Has epicuri accusamus intellegebat ad, no qui dicat laoreet…