বিচিত্র

যুক্তরাষ্ট্রে এক ধর্মীয় নেতার ২০ স্ত্রী

অনলাইন ডেস্ক :যুক্তরাষ্ট্রে একজন তথাকথিত ধর্মীয় নেতার ২০ টিরও বেশি স্ত্রী ছিল। তাদের মধ্যে কয়েকজনের বয়স ছিল ১৮ বছরের কম। আদালতে জমা দেওয়া হলফনামায় কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থার (এফবিআই) তথ্যের বরাত দিয়ে খবর জানায় বিবিসি। এফবিআই জানিয়েছে, স্যামুয়েল রাপেলি বেটম্যান নামের ওই ব্যক্তি ঈশ্বরের ইচ্ছায় তার স্ত্রীদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করেছিলেন বলে দাবি করেন। গত সেপ্টেম্বরে ৪৬ বছর বয়সী বেটম্যানের বিরুদ্ধে নথি নষ্ট করা ও ন্যায়বিচারে বাধা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছিল। 

শিশু যৌন কার্যকলাপের জন্য এফবিআই তাকে তদন্ত করছে। আদালতে জমা দেওয়া এফবিআইয়ের হলফনামায় এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হয়েছে। বেটম্যান জেসাস ক্রাইস্ট অফ ল্যাটার-ডে সেন্টস (এফএলডিএস চার্চ) এর মৌলবাদী চার্চের সদস্য। এটি মরমন সম্প্রদায়ের একটি শাখা। পরে বেটম্যান নিজেই আলাদাভাবে একটি অনুসরণ তৈরি করতে শুরু করেন। এফবিআই জানিয়েছে, পুরুষ অনুসারীরা বেটম্যানকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছিলেন। এমনকি তারা তাদের স্ত্রী ও কন্যাদেরও তার সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেয়। বেটম্যান তার অনুসারীদের কাউকে শাস্তি দিতেন যদি তারা নবীর মতে তাকে উপাসনা না করে।

১১ থেকে ১৪ বছর বয়সী তিনটি মেয়েকে একটি ট্রেলার ট্রাকে নিয়ে যাওয়ার সময় গত আগস্টে বেটম্যানকে গ্রেপ্তার করা হয়। মুচলেকায় জামিন পান তিনি। কিন্তু পরবর্তীতে নথি নষ্ট ও ন্যায়বিচারে বাধার অভিযোগে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

এই বছরের শুরুতে অ্যারিজোনা চাইল্ড সার্ভিসেস বেটম্যান থেকে নয়টি মেয়েকে উদ্ধার করেছিল। পরে তাদের গ্রুপ হোমে (নিঃস্ব মেয়েদের জন্য বিশেষ আবাসন) রাখা হয়েছিল। কিন্তু নভেম্বরে তাদের আটজন সেখান থেকে পালিয়ে যায়।

হলফনামার বক্তব্য অনুযায়ী, একজন অফিসার বেটম্যানের স্ত্রীদের একজনের দ্বারা চালিত একটি গাড়ি দেখার পরে ওয়াশিংটন রাজ্য কর্তৃপক্ষ মেয়েদের সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছিল। এফবিআই জানিয়েছে, ড্রাইভার ও বেটম্যানের অন্য দুই স্ত্রীর বিরুদ্ধে একটি ফৌজদারি মামলায় অপহরণের অভিযোগ আনা হয়েছে। ওই চালক জানান, ১৮ বছরের কম বয়সে তিনি বেটম্যানকে বিয়ে করেছিলেন। বয়স ১৮ বছর হওয়ার ৭ মাস পর তিনি সন্তান জন্ম দেন বলে এফবিআইকে জানান।

গ্রুপ হোমে রাখা নয়টি মেয়ের কেউই এফবিআইকে বেটম্যানের মাধ্যমে যৌন নির্যাতনের কথা জানায়নি। তবে হলফনামায় বলা হয়েছে, তারা বেশ কয়েকটি জার্নালে তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার ইঙ্গিত দিয়েছে। সাউদার্ন ল পোভার্টি সেন্টার এফএলডিএস চার্চকে একটি ঘৃণা গোষ্ঠী হিসেবে মনোনীত করেছে। 

বিখ্যাত কিছু ব্যক্তির কমবয়সী গার্লফ্রেন্ড!

এমন অনেক উপাদান আছে যা এক যুগলের সম্পর্কের রসায়ন নির্ধারণ করে। আপনি একজন সাধারণ মানুষ হন বা বিখ্যাত সেলেব্রিটি এই উপাদানের সঙ্গে আপনিও পরিচিত। সমবয়সীদের মতামত, শখ, চাহিদার মিল থাকা খুব স্বাভাবিক। কিন্তু হলিউডে এমন অনেক বিখ্যাত পুরুষ আছেন যাদের বান্ধবীর সঙ্গে বয়সের অনেক ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও তাদের সম্পর্ক এবং বোঝাপড়া অনেক মধুর। তাদের নিয়েই আজকের এই নিবন্ধ। 

স্টিভেন টাইলার এবং অ্যামি অ্যান প্রেস্টন (৪১ বছর)

স্টিভেন টাইলার সবচেয়ে আইকনিক রক ‘এন’ রোল তারকাদের একজন। অ্যারোস্মিথের সঙ্গে থাকাকালীন  কয়েক দশক ধরে তিনি অনেক পুরষ্কার অর্জন করেছেন এবং প্রচুর মানুষের মনোযোগ আকর্ষণ করেছেন। তাদের মধ্যে একজন ছিল তার সহকারী অ্যামি অ্যান প্রেস্টন । এই তরুণ পেশাদার রকস্টারের সঙ্গে ৪১ বছর বয়সের ব্যবধান সত্ত্বেও তিনি প্রেমময় সম্পর্কে যুক্ত ছিলেন।

লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও এবং ক্যামিলা মররোন (২৩ বছর)

লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও ছোটবেলা থেকেই বিনোদন শিল্পে কাজ শুরু করেছিলেন। এই কারণেই পুরো ডেটিং জীবনে সকলের দৃষ্টি তার দিকে ছিল। পর্দায় তার  প্রতিভা অনস্বীকার্য,। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে তিনি অনেকের সাথে সুন্দর সম্পর্কের  পথ খুঁজে পেয়েছিলেন। এই সম্পর্কের মধ্যে একটি ক্যামিলা মররোনের সাথে। ক্যাপ্রিওর সাথে তাকে শহরের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে দেখা গেছে। এই যুগলের ২৩ বছর বয়সের ব্যবধান রয়েছে।

আল পাসিনো এবং মেইটাল দোহান (৩৯ বছর)

আল পাসিনো কয়েক দশক ধরে হলিউডে বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ অভিনয় করে যাচ্ছেন। সর্বদা ব্যাচেলর পাসিনো রোমান্টিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেশ কয়েকজন বিখ্যাত অভিনেত্রীর সাথে যুক্ত হয়েছেন। যদিও এই অভিনেত্রীদের মধ্যে অনেককেই তার বয়সের কাছাকাছি ছিল তবে, মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে তিনি ইসরায়েলি চলচ্চিত্র তারকা মেইটাল দোহানের সাথে ডেটিং করছেন। মেইটাল তার চেয়ে ৩৯ বছরের জুনিয়র।

শন পেন এবং লেইলা জর্জ (৩২ বছর)

বর্ণাঢ্য এবং দীর্ঘ কর্মজীবনে শন পেন বেশ কয়েকজন বিখ্যাত নারীকে বিয়ে করেছেন। তাদের মধ্যে  ম্যাডোনা এবং রবিন রাইট অন্যতম। বিচ্ছেদের পর
তিনি নিজেকে অনেক কম বয়সী নারীর সাথে জড়ান। 

তাদের মধ্যে একজন লায়লা জর্জ। তিনি ২০১৯ সালে শনের সাথে যুক্ত হন।৷ তিনি এ লিস্ট  অভিনেতা শনের চেয়ে চেয়ে ৩২ বছরের ছোট।

ডেনিস কায়েদ এবং লরা সাভোই (৩৯ বছর)

ডেনিস কায়েদ তিনটি ব্যর্থ বিবাহের পর একটি অর্থপূর্ণ সম্পর্ক ধরে রাখতে চেয়েছিলেন। ৬৫ বছর বয়সী এই অভিনেতা তার ডেটিং জীবনকে আরও সুন্দর করার একটি উপায় খুঁজে পেয়েছিলেন। অবশেষে তিনি লরা নামের একজনকে প্রস্তাব দেন। লরা সাভোইয়ের সঙ্গে দেখা করার মাত্র চার মাস পরে তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন। ৩৯ বছর বয়সের ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও তারা বিয়ে করেন এবং তাদের একসাথে বেশ সুখী মনে হয়। 

টম ক্রুজ এবং কেটি হোমস (১৬ বছর)

টম ক্রুজ এবং কেটি হোমস উভয়েই হলিউডে বড় পর্দা এবং ছোট পর্দায় তাদের কাজের ছাপ রেখেছেন। কেটির আগে যদিও নিকোল কিডম্যান এবং মিমি রজার্সের সঙ্গে টমের সম্পর্ক ছিল। টম ক্রুজ নিজেকে ১৬ বছরের কম বয়সী একজনর জন্য নিজেকে উপযুক্ত  মনে করেছিলেন। পরবর্তীতে এই যুগল আলাদা হয়ে যান। এক্ষেত্রে বয়সের পার্থক্য কোন সমস্যা ছিল না।

পিট কুক এবং আলবা জানকু (৩৯ বছর)

পিট কুক অনেক বিখ্যাত কেউ ছিলেন না। কিন্তু ক্রিস্টি ব্রিঙ্কলিকে বিয়ে করার পর  এই স্থপতি লাইমলাইটে চলে আসেন। বিবাহবিচ্ছেদের পরে পিট তার প্রাক্তনের চেয়ে কিছুটা কম বয়সী নারীদের সাথে ডেটিং শুরু করেছিলেন।তিনি ২১ বছর বয়সী আলবা জানকোর প্রেমে পড়েন । তাদের বয়সের ব্যবধান ৩৯ বছর এবং আলবা পিটের মেয়ের চেয়েও ছোট। 

জ্যাক ব্রাফ এবং ফ্লোরেন্স পুগ (২১ বছর)

জ্যাক ব্রাফ কির্স্টেন ডানস্ট এবং ড্রু ব্যারিমোর সহ বড় তারকাদের সাথে সম্পর্কে যুক্ত ছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি অনেক কম বয়সী অভিনেত্রীর সাথে সম্পর্কে জড়ান। জ্যাক ব্রাফ ২০১৯ সাল থেকে ফ্লোরেন্স পুগের সাথে সম্পর্কে রয়েছেন।  তাদের বয়সের ব্যবধান ২১। ব্ল্যাক উইডো তারকা এবং তার প্রেমিককে অনেক অনুষ্ঠানে কটাক্ষ্য শুনতে হয়েছে। কিন্তু  তাদের মধ্যে সুসম্পর্ক রয়েছে বলে জানা যায়।

ড্যান কুক এবং কেলসি টেলর (২৬ বছর)

ড্যান কুক বেশ জনপ্রিয় একজন কৌতুক অভিনেতা যিনি যেকোনো বিষয়কে শীর্ষে রাখতে পছন্দ করেন। সম্ভবত সে কারণেই তিনি কম বয়সী নারী কেলসি টেলরকে সম্পর্কের জন্য বেছে নিয়েছিলেন। তারা বেশ কিছুদিন ধরে একসাথে ছিলেন। কুকের বাড়িতে এক রাতে দেখা করার পর দুজনের মধ্যে দ্রুত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এমনকি ২৬ বছর বয়সের ব্যবধান সত্ত্বেও তাদের মধ্যে অনেক মিল রয়েছে।

এছাড়া হলিউডের অনেক তারকাই বয়সের বেশি ব্যবধানে সম্পর্ক তৈরি করেন। তাদের মধ্যে মাইকেল শিন এবং আনা লুন্ডবার্গ (২৫ বছর), কেলসি গ্রামার এবং কায়েট ওয়ালশ (২৫ বছর), রবিন থিক এবং এপ্রিল লাভ গেরি (১৮ বছর), ডেভিড ফস্টার এবং ক্যাথরিন ম্যাকফি (৩৪ বছর), পি. ডিডি এবং লরি হার্ভে (২৮ বছর), উইলমার ভালদেরামা এবং ডেমি লোভাটো (১২ বছর), মেল গিবসন এবং রোজালিন্ড রস (৩৫ বছর), বেন অ্যাফ্লেক এবং আনা ডি আরমাস (১৬ বছর) অন্যতম।

চেঙ্গিজ খানের সম্পদ!

চেঙ্গিস খান ওরফে তেমুজিন ছিলেন মোঙ্গল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা এবং এই সাম্রাজ্যের প্রথম ‘গ্রেট খান (সম্রাট)’। তিনি ছিলেন বিপুল সম্পত্তির মালিক। হিসাব বলছে, স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে চেঙ্গিসের মোট যে সম্পত্তি ছিল, তার বর্তমান মূল্য ১২০ লাখ কোটি ডলার। অর্থাৎ বিশ্বের বর্তমান ধনকুবেরদের মোট সম্পত্তি মিলিয়েও এত সম্পত্তি হবে না।

হিসাব অনুযায়ী, চেঙ্গিসের মোট সম্পত্তির বর্তমান মূল্য বিশ্বের সমস্ত কোম্পানির মোট সম্পদের তিন গুণ। এমনকি, তার মোট সম্পত্তি দিয়ে কিনে নেয়া যেত আমেরিকাকেও। ইতিহাসে চেঙ্গিসকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ এবং ধনী শাসকদের মধ্যে অন্যতম বলে মনে করা হয়। শাসনকালে এশিয়া ও ইউরোপ জুড়ে প্রায় ১৫০ লক্ষ বর্গমাইলেরও বেশি জায়গা জয় করেন চেঙ্গিস। এর মধ্যে শুধু চিনেই ছিল ৯০ লক্ষ বর্গমাইল জমি।

তবে চেঙ্গিসের কাছে কী এমন সম্পত্তি ছিল, যা তাকে এত ধনী বানিয়েছিল? চেঙ্গিস যে পরিমাণ জমির মালিক ছিলেন, তার বর্তমান বাজার মূল্য ৯০ লাখ কোটি ডলার। চেঙ্গিসের স্বর্ণভাণ্ডারে থাকা সোনার পরিমাণও ছিল বিপুল। তার কোষাগারে দু’লক্ষ টনেরও বেশি পরিমাণ সোনা ছিল। চেঙ্গিসের আমানতে থাকা সোনার বর্তমান মূল্য ১০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। চীন এবং মঙ্গোলিয়ায় প্রচুর পরিমাণ মূল্যবান ধাতুর খনি সমৃদ্ধ ভূমিও জয় করেছিলেন চেঙ্গিস। এমনকি, চেঙ্গিসের মালিকাধীন জমিতে ইউরেনিয়ামের খনিও ছিল। প্রচুর পরিমাণ হীরা ছিল চেঙ্গিসের মণিভাণ্ডারে। চেঙ্গিসের কাছে থাকা মোট হিরের বর্তমান মূল্য ১ লাখ কোটি ডলার।

নিজের শাসনকালে বহু দুর্গ নির্মাণ করেন চেঙ্গিস। পাশাপাশি বহু দুর্গ তিনি জয়ও করেছিলেন। চেঙ্গিসের কাছে থাকা মোট দুর্গের সংখ্যা ছিল ১০৫০। চেঙ্গিসের আস্তাবলে মোট ২ লাখ ৭০ হাজার ঘোড়া ছিল। এক-একটি ঘোড়ার বর্তমান মূল্য চার লাখ টাকারও বেশি। চেঙ্গিস খান ১১৬২ সালে মঙ্গোলিয়ার বর্তমান রাজধানী উলানবাতারের কাছে একটি জায়গায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন ইয়েসুগেই এবং ইয়েসুগেইয়ের দ্বিতীয় স্ত্রী হোয়েলুনের প্রথম সন্তান।

জীবদ্দশায় চেঙ্গিস মোট ছ’জনকে বিয়ে করেন। চেঙ্গিসের ছয় স্ত্রীর নাম বোর্তে, ইয়েসুজেন, ইয়েসুই, খুলন খাতুন, মৃগে খাতুন, জুয়েরবিসু এবং ইবাকা বেকি। সন্তান-সন্ততির সংখ্যাও ছিল অনেক। চেঙ্গিস ১২২৭ সালের অগস্ট মাসে পশ্চিম জিয়ার রাজধানী ইনচুয়ানের পতনের সময় মারা যান। উলুগ খান এবং জেনারেল জাফর খানের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ চলাকালীন ঘোড়া থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় চেঙ্গিসের। মারা যাওয়ার অনেক আগেই ছেলে ওগেদি খানকে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন চেঙ্গিস। মৃত্যুর সময় প্রায় দেড় লাখ সৈন্যের একটি বাহিনী তিনি রেখে গিয়েছিলেন। চেঙ্গিসের মৃত্যুর পর সমস্ত সম্পত্তি তার সন্তানদের মধ্যে ভাগ করা হয়।

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি

উত্তর ২৪ পরগণা  জেলার বনগাঁ মহকুমার গোপালনগর শ্রীপল্লীর বাড়িতে  কেটেছে  সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহিত্যিক জীবনের  অনেকটা  সময়। ইছামতী থেকে ঢিল ছোঁড়া  দূরত্বের এই বাড়িতে  বসে বিভূতিভূষণের কলম জন্ম দিয়েছে পথের পাঁচালি, ইছামতীর মত কালজয়ী  সব উপন্যাসের। কে বলতে পারে  অপু-দূর্গা, ইন্দির ঠাকরুণ, সর্বজয়া, হরিহরেরা হয়ত উঠে  এসেছিলেন  এই সেই  সময়কার  প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চল থেকেই।  হয়তবা বাঙালির  শৈশব -কৈশোরের  হিরো শঙ্করের চাঁদের পাহাড়ের আ্যডভেঞ্চারের প্লট তৈরি  করে  দিয়েছিল  ইছামতী। রবীন্দ্রনাথের  যদি  হয় পদ্মা, শরৎচন্দ্রের  রূপনারায়ণ তবে বিভূতিভূষণের  ইচ্ছামতী। আজকের  মত তখন তার শীর্ণ কচুরিপানা  ক্লিষ্ট  চেহারা ছিলনা। প্রকৃতিপ্রেমিক বিভূতিভূষণের  দিনের বেশির ভাগ  সময়টা কাটত এই ইছামতীর ঘাটে বসে লেখালেখি  করেই। বাড়িটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘স্মৃতিররেখা’। তবে, ওই নামকরণ হয় বিভূতিভূষণের মৃত্যুর পরে।

শ্রী পল্লীর  এই বাড়ির লাগোয়া  তৈরি  হয়েছে বিভূতিভূষণ স্মৃতি রক্ষাপার্ক। রয়েছে  সাহিত্যিকের একটি মূর্তিও রয়েছে।  রয়েছে গেস্ট হাউস। তবে নেই  যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ। আক্ষেপ ঝরে  পড়ে কেয়ারটেকার  সনৎ দাসের কথায়। 
১৮৯৪ খ্রিঃ ১২ সেপ্টেম্বর  কাচড়াপাড়ার কাছে ঘোষপাড়া – মুরাতিপুর গ্রামে  মাতুলালয়ে  জন্ম নেন বিভূতিভূষণ। বনগাঁর কাছে গোপালনগর হরিপদ ইনস্টিটিউশন স্কুলের শিক্ষক ছিলেন তিনি। । এই স্কুলেই তিনি আমৃত্যু কর্মরত ছিলেন। এই মহান কথাসাহিত্যিক ১৯৫০ খ্রিষ্টাব্দের ১লা নভেম্বর তারিখে বিহারের (বর্তমানে ঝাড়খন্ড) ঘাটশিলায় মৃত্যুবরণ করেন।  ১৯২১ খ্রিষ্টাব্দে (১৩২৮ বঙ্গাব্দ) প্রবাসী পত্রিকার মাঘ সংখ্যায় উপেক্ষিতা নামক গল্প প্রকাশের মধ্য দিয়ে তার সাহিত্যিক জীবনের সূত্রপাত ঘটে। ভাগলপুরে কাজ করার সময় ১৯২৫ সালে তিনি পথের পাঁচালী রচনা শুরু করেন। এই বই লেখার কাজ শেষ হয় ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে। শ্রীপল্লির এই বাড়ি  আর ইছামতীর  পারেই লেখা  হয় এই কালজয়ী সাহিত্য। স্মৃতিররেখা বাড়িতে আজও ভিড় করেন  সাহিত্যনুরাগীরা। আম,জাম, বড়বড় গাছ  দিয়ে  ঘেরা এই বাড়িতে  আজও কান পাতলে যেন শোনা যায় সেই সব অমর সৃষ্টির অনুরণন।