একটি পুত্র সন্তানের জন্যে

মূল: খুশবন্ত সিং
অনুবাদ: আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু

ঈশ্বর ও ধর্মের ব্যাপারে দেবীলালের গভীর আগ্রহ। তরুণ বয়সেই তিনি অস্তিত্বের সংকট নিয়ে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েন। এ ব্যাপারে বন্ধুবান্ধব, মন্দিরের পূজারি ও মসজিদের ইমাম সাহেবদের সাথে যুক্তিতর্কে লিপ্ত হতেন। প্রশ্ন করতেন, আসলেই কি ঈশ্বর আছেন? একেক জনের ভিন্ন ভিন্ন উত্তর পেতেন। কোনো ব্যাখ্যাই দেবীলালকে সন্তুষ্ট করতে পারতো না। দেবী লাল উপসংহারে পৌছলেন, ঈশ্বর খামখেয়ালি। দেবীলাল কীভাবে বিশ্বাসীতে পরিণত হলেন, সেটি নিয়েই এই কাহিনী।

দেবীলালের বাবা জলন্ধরের শহরতলিতে অবস্থিত এক সরকারি স্কুলে উর্দু ও ইতিহাস পড়াতেন। পরিবারের চাহিদা পূরণের জন্যে বাবাকে সংগ্রামরত দেখতে দেখতে দেবীলাল বড়ো হয়েছেন। তাদের সব আত্মীয়স্বজন সম্পন্ন মানুষ এবং তারা তাদেরকে দেখত করুণার দৃষ্টিতে। ফলে তিনি ঈশ্বরের ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। কিন্তু ম্যাট্রিক পাস করে কলেজে পড়াশোনার জন্যে বৃত্তি লাভ করার পর তিনি সর্বশক্তিমানকে তার সন্দেহ থেকে মুক্তি দেন। গ্যাজুয়েশন লাভের পর দেবীলাল পাঞ্জাবের রাজধানী চণ্ডীগড়ে ড্রাফটসম্যানের চাকরি পেলেন মাসিক দু’শ টাকা বেতনে। এক বছর পর তিনি জানকী নামে সাদামাটা চেহারার একটি মেয়েকে বিয়ে করলেন বাবা মার ইচ্ছায়। ধনী পরিবারের একমাত্র কন্যা জানকী সাথে নগদ অর্থসহ অনেক যৌতুক আনেন। নিজের সঞ্চয় এবং যৌতুকের অর্থে চণ্ডীগড়ের পাশেই মোহালিতে জমি কিনে একটি বাড়ি তৈরি করে জানকীকে নিয়ে সেখানে উঠলেন। দেবীলালের স্ত্রী হিসেবে জানকী গর্বিত। স্বামীর প্রয়োজনের ব্যাপারে তিনি সতর্ক ও যত্নশীল। হিন্দু স্ত্রী হিসেবে বেশি কামুকতা প্রদর্শন করেন না, কিন্তু স্বামী সঙ্গমে আগ্রহ দেখালেই বিছানায় শুয়ে সালোয়ার খুলে দুই পা প্রসারিত করে তার আগ্রহে সাড়া দেন। জানকী যৌনকর্ম তেমন উপভোগ করেন না, কিন্তু প্রথম রাতের পর সবকিছু সহনীয় হয়ে গেল। সঙ্গমে মেয়েদের পরিতৃপ্তি সম্পর্কে কেউ তাকে বলেনি এবং সে কোনো পরিতৃপ্তি লাভ করেনি। বিয়ের চতুর্থ মাসে জানকী গর্ভধারণ করলেন। প্রার্থনা করলেন স্বামীর পুত্রের মা হওয়ার। ভগবান তাকে একটি কন্যা সন্তান দিলেন। তার মনে হলো, তিনি স্বামীকে অপমান করেছেন। দেবীলাল পুত্র আশা করলেও জানকীকে সান্ত্বনা দিলেন এবং কন্যার নাম রাখলেন সাবিত্রী।

শিশুকন্যা স্তন পান করায় দেবীলাল যৌনকর্মে বিরত থাকলেও ছয় মাস পর নিজেকে ঠেকিয়ে রাখতে পারলেন না। তিন মাস পর জানকী আবার গর্ভধারণ করলেন। দ্বিতীয় সন্তানটিও হল কন্যা। জানকীর মনে হল, আবারও তিনি স্বামীর মর্যাদায় আঘাত দিয়েছেন। দেবীলাল তাকে সান্ত্বনা দিয়ে বললেন, ‘ভগবান যা করেন ভালোই করেন।’ মেয়েটির নাম রাখা হল লীলা। স্বামী ব্যাপারটি স্বাভাবিকভাবে গ্রহণ করলেও জানকী তাকে একটি পুত্রসন্তান দিতে সংকল্পবদ্ধ। আবার যখন তারা যৌনমিলনে লিপ্ত হতে শুরু করল, জানকী বেশি উৎসাহ নিয়ে এতে অংশগ্রহণ করলেন। এখন তিনি পুরো নগ্ন হয়ে বিছানায় শুয়ে পড়েন, স্বামী তার ওপর উপগত হলে তাকে আলিঙ্গনে আবদ্ধ রাখেন। তিনি আবিষ্কার করেন, যৌনকর্ম অত্যন্ত উপভোগ্য। কয়েক মাস পর আবার জানকীর গর্ভ সঞ্চার হয়। তৃতীয় সন্তানের জন্মের পর জানকী জানতে চান, ‘এটা কী মেয়ে না ছেলে ?’ নার্স শিশুকে তুলে ধরে উত্তর দেয়, ‘বিবিজি, ফুটফুটে ছোট্ট মেয়ে।’ কান্নায় ভেঙে পড়ে জানকী। তিক্ত, হতাশ দেবীলাল তাকে বলেন অদৃষ্টের হাতে নিজেকে সপে দিতে। তারা তৃতীয় কন্যার নাম রাখলেন নয়না।

ঈশ্বরের সাথে শান্তি স্থাপন করে নিয়েছিলেন দেবীলাল। পরবর্তী আট বছর পর্যন্ত দেবীলাল যৌনকর্ম পনেরো দিনে এক বারে সীমিত করে ফেললেন। যখন তার মনে হল, জানকীর আর সন্তান সম্ভাবনা নেই, তখন তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠলেন। জানকী যখন চতুর্থ দফা গর্ভধারণ করলেন তখন তার বয়স সাঁইত্রিশ বছর। তার চতুর্থ সন্তানের জন্ম হল। এটি ছিল পুত্র সন্তান। স্বামী স্ত্রী তাদের ভাগ্যকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। ছেলের নাম রাখলেন রাজকুমার। দেবীলালের তার তিন মেয়ে সুন্দরী না হলেও একেবারে খারাপ নয়, ভদ্র এবং পড়াশুনায় ভালো। সাবিত্রীর বয়স যখন আঠারো এবং লীলার ষোলো তখন দেবীলালের এক জুনিয়র সহকর্মী তার বিশোর্ধ বয়সের দুই ছেলের বিয়ের প্রস্তাব আনেন এবং একই দিনে দুই মেয়ের বিয়ে সম্পন্ন হয়। এর তিন বছর পর এক ঠিকাদার তার ডাক্তার পুত্রের জন্যে নয়নার পাণি প্রার্থনা করলে ষোলো বছর বয়সে নয়নারও বিয়ে হয়ে যায়।

চাকরি থেকে অবসর নেয়ার পরও দেবীলাল পরিতৃপ্ত মানুষ। তার কন্যাদের ভালো পরিবারে বিয়ে হয়েছে এবং পুত্র বড়ো একজন অফিসার হবে এবং যথেষ্ট উপার্জন করবে তার সকল লক্ষণ পরিস্ফুট ছিল। রাজকুমার পড়াশুনায় কৃতিত্ব দেখিয়ে বাবা মাকে গর্বিত করল। একজন ভালো ক্রীড়াবিদও ছিল সে। দেবীলাল মাঝারি গড়নের হলেও রাজকুমারের উচ্চতা ছয় ফুট ও বলিষ্ঠ। কলেজ শেষ করে রাজকুমার সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে দেবীলাল পুত্রকে পরামর্শ দিলেন পুলিশ সার্ভিসে যোগ দিতে। কারণ একজন পুলিশকে রাজনীতিবিদ ও মন্ত্রীরা পর্যন্ত ভয় করে, যদিও সৌজন্যের খাতিরে তাদেরকে স্যালিউট দিতে হয়। তাছাড়া পুলিশের ‘ওপরি আয়’ যথেষ্ট। সে ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিসে যোগ দিয়ে প্রশিক্ষণের জন্য মুসুরিতে একাডেমি অফ এডমিনিস্টেশনে যোগ দেয়ার নির্দেশ পায়।

এদিকে দেবীলাল ও জানকী রাজকুমারের বিয়ের স্বপ্ন দেখছেন। কিন্তু হতাশার মধ্যে পড়েন তারা। মুসুরির এডমিনিষ্ট্রেশন একাডেমি ও নাগপুরের সিভিল ডিফেন্স একাডেমির ট্রেনিং শেষ করে রাজকুমার হায়দরাবাদের পুলিশ ট্রেনিং কলেজে গিয়ে ছয় মাস কাটানোর পর বাবা মাকে লিখল তাকে ক্ষমা করতে। কারণ তাদের আশীর্বাদ না নিয়ে সে তার ব্যাচের এক মহিলা ট্রেইনি অফিসারকে বিয়ে করেছে। সে জানিয়েছে, ‘মেয়েটি শিখ, হিন্দু নয়। ওর নাম বলজিৎ কাউর সিধ্ধু।’ ওই বছর ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিসে নির্বাচিত পঞ্চাশ জনের মধ্যে পাঁচজন মেয়ে ছিল, যাদের মধ্যে বলজিৎ সবচেয়ে সুন্দরী। ব্যাচে রাজকুমারই ছিল একমাত্র পাঞ্জাবি এবং অত্যন্ত সুদর্শন। ক্লাসে ও ক্যান্টিনে বলজিৎ রাজকুমারের পাশে বসে। মুসুরির ট্রেনিং শেষে তাদেরকে যখন নাগপুরে সিভিল ডিফেন্স কলেজে পাঠানো হয়, তখন হাত ধরাধরি করতে ও চুমু দিতে শুরু করেছে। এরপর হায়দরাবাদে পুলিশ একাডেমিতে ছয় মাসের কোর্স। ছেলে ও মেয়েদের পৃথক ডরমিটরিতে রাখা হল। এই বিচ্ছিন্নতার মধ্যে এক রোববার বলজিৎ শহরে আগে থেকে বুকিং দেয়া এক হোটেলে রুমে রাজকুমারকে নিয়ে যায় এবং সেখানে সারা দিন ও সারা রাত ধরে তারা প্রেম বিনিময় করে পরদিন সকালে একাডেমিতে ফিরে আসে। ডরমিটরি থেকে তাদের অনুপস্থিতির বিষয় পরিচালকের কাছে রিপোর্ট করা হয়েছিল। পরিচালক কঠোরভাবে বললেন, ‘একাডেমির শৃঙ্খলা ভঙ্গের জন্যে তোমাদেরকে সার্ভিস থেকে বরখাস্ত পর্যন্ত করা হতে পারে।’ বলজিৎ কেঁদে ফেলল, ‘স্যার, আমরা বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি, চাকরি হারালে আমরা ধ্বংস হয়ে যাব।’

‘তোমরা কি বিয়ে করার জন্যে তোমাদের বাবা মার অনুমতি নিয়েছ ?’ প্রশ্ন করেন পরিচালক।
‘না স্যার, এখনো নেইনি। বিয়ে করেই আমরা তাদের অনুমতি নেব। হায়দরাবাদে আপনিই আমাদের বাবা মা—আমাদের অভিভাবক। আপনি যে হুকুম দেবেন তাই করব আমরা।’

পরিচালক নমনীয় হলেন। একটু চুপ থেকে বললেন, ‘ঠিক আছে, তোমরা ম্যারেজ লাইসেন্স সংগ্রহ কর। আমি একজন ম্যাজিস্ট্রেটকে ডাকছি একাডেমিতে একটি সিভিল ম্যারেজের ব্যবস্থা করাতে।’ দুমাস পর বলজিৎ কাউর সিধ্ধু ও রাজকুমার স্বামী ও স্ত্রীতে পরিণত হল।

রাজকুমারের চিঠি পড়ে দেবীলালের আশা ভেঙে গিয়েছিল। রাগে দুঃখে দেবীলাল বললেন, ‘আমাদের সাথে পরামর্শ করার প্রয়োজন পর্যন্ত বোধ করল না। তার ওপর মেয়েটি হিন্দু নয়।’ জানকীও হতাশাগ্রস্ত। তবুও স্বামীকে সান্ত্বনা দিলেন। দেবীলাল পুত্রকে আশীর্বাদ জানিয়ে লিখলেও একটি শর্ত দিলেন, হিন্দু মতে আবার বিয়ে এবং সম্বর্ধনার আয়োজনও করতে হবে। কয়েক মাস পর রাজকুমার ও বলজিৎ ট্রেনযোগে দিল্লি থেকে চণ্ডীগড়ে পৌঁছল। জানকী তার হাত বলজিতের মাথার ওপর তুলে আশীর্বাদ করলেন, ‘সাত পুত্রের মা হও’। বলজিৎ হেসে ফেলল, ‘মাতাজি, আমাদের জন্যে একটাই যথেষ্ট। আমার মনে হয় না যে, আমি সাতটি পুত্রকে সামলাতে পারব।’ বলজিতের বাবা-মা, ভাইয়েরও ষ্টেশনে এসেছিলেন। তার বাবা সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত অফিসার কর্নেল সিধ্ধু। তারা কফি পান করতে করতে পরস্পরের সাথে পরিচিত হলেন। বিবাহ অনুষ্ঠানের প্রয়োজনীয়তার বিষয় আলোচনা করলেন।

দেবীলাল ও কর্নেল সিধধুর উদ্যোগে বিয়ের দুটি অনুষ্ঠান হল। দেবীলাল হিন্দু রীতিতে আর্য সমাজ মন্দিরে এবং কর্নেল সিধ্ধু নিজ বাড়িতে শিখ রীতি অনুযায়ী বিয়ের আয়োজন করেছিলেন। সিধ্ধুদের উপহার দেয়া ফুল দিয়ে ঢাকা নতুন মারুতি গাড়িতে বলজিৎ ও রাজকুমার এবং বিয়েতে দেয়া যৌতুক – রঙিন টেলিভিশন, ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিন, বলজিৎ ও দেবীলালের পরিবারের জন্যে কাপড়চোপড় ভর্তি কয়েকটি স্টিলের ট্রাংক উঠানো হল একটি ট্রাকে। গাড়ির বহর যখন গ্রাম ছেড়ে চণ্ডীগড়ের পথে যাচ্ছিল, তখন জানকী তার স্বামীকে বললেন, ‘আমাদের ছোট্ট বাড়িতে আমরা এসব কোথায় রাখব ?’ দেবীলাল হাত উঁচিয়ে পাত্তা না দেয়ার মতো বলল, ওদেরকে একটি বাংলো দেয়া হয়েছে। সেখানে চারটি বেড রুম, ড্রয়িংরুম, ডাইনিং রুম, সার্ভেন্টস কোয়ার্টার এবং মালিসহ একটি বাগান আছে।

রাজকুমার এবং বলজিৎ তাদের প্রথম রাত যাপন করল বাবা-মার বাড়িতে। পরদিন সকালে রাজকুমার তার বাবা মাকে নতুন মারুতি গাড়িতে উঠিয়ে সরকারি বাংলোতে নিয়ে গেল। এখানে বলজিৎ সর্বেসর্বা। কয়েক দিন পর বলজিৎ গাড়িযোগে শ্বশুর বাড়িতে এসে বলল, মাতাজি, চারপাশে গজিয়ে উঠা এসব ঘাসের কারণে আপনি যে শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তা আমাকে কখনো বলেননি। আপনাকে এখানে আর একদিনও থাকতে দিচ্ছি না আমি। আপনি সাথে যা নিতে চান সেগুলো তুলে নেয়ার জন্যে আমি পুলিশসহ ট্রাক পাঠিয়ে দিচ্ছি। আপনার চাকরকেও সাথে নিতে পারেন। আমাদেরও বিরাট উপকার হবে। আমরা সারা দিন বাইরে কাজে থাকব। আপনি বাড়ির দেখাশুনা করতে পারবেন।’ জানকীর কাছে স্পষ্ট হল, বলজিতের প্রয়োজন একজন ভালো হাউজ কিপারের। প্রতিদিন সকালে নাস্তার সময়ে তিনি তার পুত্র ও পুত্রবধূর কাছে জানতে চান যে, তারা লাঞ্চ ও ডিনারে কী খাবে। তাদের খাওয়ার সময় নিশ্চিত হতে চাইতেন যে, তাদের কোনো অভিযোগ নেই। অফিস থেকে ফিরতে প্রায়ই তাদের সন্ধ্যা পেরিয়ে যেত। দেবীলাল ও জানকী সামান্য কিছু সময় তাদের সাথে বসে নিজেদের রুমে চলে যেতেন। দুজনই আঁচ করেছিলেন, তাদের পুত্র ও পুত্রবধূ ডিনারের আগে দু-এক পেগ মদ পান করে, কিন্তু তাদের উপস্থিতিতে পান করে না। তাদের বেডরুমে তামাকের যে গন্ধ ভেসে আসত তাতে তারা বুঝে নিয়েছিলেন, রাজ ধূমপান করে। তরুণ দম্পতির আচার আচরণে তারা স্তম্ভিত।

এক সকালে এই জুটি যখন গাড়িতে উঠছিল তখন জানকী লক্ষ করলেন, তার পুত্রবধূর দেহ কেমন সুগঠিত : বিরাট স্তন, সরু কোমর এবং গুরু নিতম্ব যেন খাকি ট্রাউজার ফেটে বের হতে চাইছে। স্বামীর কাছে জানকী ‘সে অত্যন্ত হৃষ্টপুষ্ট’ বলে মন্তব্য করলে দেবীলাল বললেন, ‘ইংরেজিতে ওরা বলে সেক্সি। সে অনেকগুলো স্বাস্থ্যবান সন্তান ধারণ করতে পারবে।’ কিন্তু রাজকুমার ও বলজিৎ পরিবার শুরু করার আগে তারা চাকরিতে নিজেদের ভালোভাবে সম্পৃক্ত করে নিতে চায়। বিয়ের পরও তারা সঙ্গমে কনডম ব্যবহার অব্যাহত রেখেছিল, যেমনটি তারা হায়দরাবাদে তাদের সম্পর্ক শুরুর সময়ে করত। প্রথম কয়েক বারের পর সাধারণত বলজিৎই উদ্যোগ নিত। সে হাঁটু পর্যন্ত লম্বিত নাইটি পরত, যার ফলে সে সামনের দিকে ঝুঁকে পড়লে তার বিশাল ও মৃসণ নিতম্ব বেরিয়ে পড়ত এবং প্রায়ই ঝুঁকত সে। একপাশে সরে যাওয়া তার পোশাকের ফাঁক দিয়ে তার বিরাট ও সুগঠিত স্তন সবসময় দেখা যেত। এতেও যদি রাজকুমারের যৌন আকাক্সক্ষা না জাগত তাহলে সে রাতের শেষ চুম্বন দাবি করত, যা সে ইঙ্গিত না পাওয়া পর্যন্ত প্রলম্বিত করত বলজিৎ। সে রাজের চাইতে অধিক সক্রিয় অংশগ্রহণ করত যৌনকর্মে। রাজ বালিশের নিচ থেকে দ্রুত একটি কনডম বের করে তা তার উত্থিত অঙ্গে পরিয়ে দু-এক মিনিটের মধ্যে নিঃশেষিত হত, কিন্তু তখনো বলজিৎ পরিতৃপ্তির কাছেও পৌঁছত না। বলা যায় তার জ্বালা আরো বাড়ত। সে রাজকে তার এ অবস্থা সম্পর্কে ব্যাখ্যা করত, ‘দেখো, আমি পুরোপুরি একজন জাত কৃষক কন্যা।’ রাজের তখন শ্বাস অবরুদ্ধ প্রায় অবস্থা। ‘তুমি শহরে বেড়ে উঠা ক্ষত্রিয়, বানিয়া জাতের। আমরা তোমাদের চাইতে অধিক কামলিপ্সু। শারীরিক কোনো কিছুতেই তোমরা আমাদের সাথে পেরে উঠবে না।’ এই মন্তব্যে আহত হয়ে রাজ সঙ্গমে আরো সক্রিয় হতে সাধ্যমতো চেষ্টা করে।
বিয়ের দুই বছর পরও রাজ ও বলজিতের কোনো সন্তান না হওয়ায় দুজনেরই বাবা-মা একটি নাতি লাভের আশা বর্জন করতে শুরু করেছিল। বলজিৎ বলে, ‘তাড়াহুড়ার কী আছে ? এখনো অনেক সময় পড়ে আছে।’ কিন্তু তার নিজের মা তাকে পীড়াপীড়ি করেন বেশি। বলেন, ‘তরুণীরাই স্বাস্থ্যবান শিশু ধারণ করে। তাছাড়া তুমি যদি এখন তোমার স্বামীকে একটি পুত্র দাও, তাহলে তুমি যখন আর তরুণ থাকবে না তখনো সে তোমাকে ছেড়ে আর কিছু ভাববে না। যৌবনকাল তোমাকে এক চোখা করে রেখেছে।’ পীড়াপীড়িতে অতিষ্ঠ বলজিৎ স্বামীকে ব্যাপারটি বলল। রাজকুমার একটু ভেবে উত্তর দেয়, ‘অসুবিধা কোথায় ? তোমার যদি কোনো সমস্যা না থাকে তাহলে আমার কোনো আপত্তি নেই।’ সে কনডম কেনা বন্ধ করে দেয়। যৌনকর্ম আরো উপভোগ্য হয়ে উঠে। বলজিৎ চিকিৎসা বিষয়ক বইপত্র পড়তে শুরু করে, যার মধ্যে একটিতে এমন নিশ্চয়তাও ছিল যে, যদি মাসিক ঋতু চক্র অতিক্রান্ত হওয়ার পর সুনির্দিষ্ট দিনের মধ্যে গর্ভ সঞ্চার হয়, তাহলে পুত্র সন্তান লাভ নিশ্চিত। সে রাজকুমারকে বিষয়টি অবহিত করার পর সে পরপর চার রাত কর্তব্য পালন করল। কিন্তু কিছুই ঘটল না। বলজিৎ একজন ধাত্রীবিদ্যা বিষয়ক বিশেষজ্ঞের সাথে পরামর্শ করল। তাকে গর্ভধারণের উপযুক্ত ঘোষণা করে তিনি বললেন, ‘আপনি যদি দীর্ঘদিন ধরে গর্ভনিরোধক বটিকা সেবন করে থাকেন কিংবা আপনার স্বামী যদি দীর্ঘদিন ধরে কনডম ব্যবহার করে থাকেন, তাহলে আপনার গর্ভধারণে একটু সময় লাগতে পারে। ধৈর্য ধরুন।’

কোনো সফলতা ছাড়াই আরো চার মাস অতিক্রান্ত হল। বলজিৎ উৎকণ্ঠিত হয়ে স্বামীকে না জানিয়ে গুরুদুয়ারায় সাত দিন পর্যন্ত গ্রন্থ সাহিব পাঠ ও লঙ্গরখানার জন্যে দান করল। কোনো কাজ হল না। আবারও সে স্বামীকে না জানিয়ে কৃষ্ণ মন্দিরে পূজাপাঠ করাল। এ উদ্যোগও ব্যর্থ হল। এক সন্ধ্যায় স্বামীকে বলল, ‘আমাদের সমস্যা কোথায় ? আমরা খরগোসের মতো ঘন ঘন যৌনকর্ম করছি, তবুও গর্ভ সঞ্চারের লক্ষণ নেই। আমি একজন গাইনোকোলাজিস্টের সাথে সাক্ষাৎ করেছি, তিনি বলেছেন আমার কোনো সমস্যা নেই। তোমার কী অবস্থা ?’ রাজকুমার রেগে উত্তর দেয়, ‘আমার আবার কী, আমি ঠিক থাকার চাইতেও ভালো। প্রতি বছর আমি মেডিক্যাল টেস্ট করাই। মেডিক্যাল অফিসার বলেন, নিখুঁত স্বাস্থ্য।’ রাজকুমার ইতোমধ্যে তার বীর্যের নমুনা পরীক্ষার জন্যে পাঠিয়েছিল এবং তাকে আশ্বস্ত করা হয়েছে যে তার বীজাণু জীবন্ত, নারী গর্ভে প্রবেশের জন্যে উৎসুক।

বলজিৎ বলল যে, একবার দিল্লিতে তারা এক মুসলিম দরবেশের দরগায় গিয়ে মাজারের জালিতে রঙিন সুতা বাঁধা দেখে খাদেমের কাছে সূতা বাঁধার কারণ জানতে চেয়েছিল। খাদেম বলেছিলেন, ‘কেউ কিছু মানত করলে এ রকম সুতা বাঁধে। যেসব মহিলা সন্তান কামনা করে তারা এখানে আসে। অসুস্থ লোকজনও নিরাময়ের আশায় আসে এবং ফাতিহা পাঠ করে।’ বলজিৎ এসব শুনে বিদ্রƒপের হাসি হেসেছিল। এখন তার কাছে কথাগুলো বিশ্বাসযোগ্য মনে হচ্ছে। চণ্ডীগড়ের আশপাশে অনেক দরগাহ। বলজিৎ সে সব দরগাহর পাশ দিয়ে গাড়ি চালিয়ে গেলেও কখনো ভিতরে প্রবেশ করেনি। জুনিয়র পুলিশ ক্যাডারদের ট্রেনিং স্কুলের পথের পাশেই একটি দরগাহ আছে পিঞ্জোরে মোগল উদ্যানের মুখোমুখি। সৌধ সমৃদ্ধ জায়গাটির ব্যাপারে তার কৌতূহল ছিল। এক সন্ধ্যায় ট্রেনিং স্কুল পরিদর্শন শেষে আসার পথে সে ড্রাইভারকে দরগার বাইরে গাড়ি থামাতে বলে ভিতরে প্রবেশ করল। সবুজ লুঙি ও কুর্তা পরা দীর্ঘদেহী ও অগোছালো কালো দাড়িবিশিষ্ট ও গোঁফ কামানো তরুণ কোথা থেকে এগিয়ে এসে তাকে শুভেচ্ছা জানাল:

‘সালাম বিবি।’
‘তুমি কে ?’ বলজিৎ জানতে চাইল।
‘আমি মাজারের খাদেম। পির সাহেবের মাজারে কেউ এলে তাদের জন্য মোনাজাত করি।’
‘পির সাহেব কে ?’
‘তার সম্পর্কে শুধু এটুকু জানি যে, তিনি দরবেশতুল্য মানুষ ছিলেন, যার কাছে কেউ এলে তিনি তার ইচ্ছা পূরণ করতেন। ওয়াক্ফ বোর্ড আমাকে এখানে নতুন নিয়োগ করেছে। আমি সামান্য বেতন পাই। জায়গাটি বিচ্ছিন্ন, জনমানবহীন। আপনি এসেছেন সেজন্যে আমি কৃতজ্ঞ।’

বলজিৎ তাকে আপাদমস্তক দেখল। পুরু ঠোঁট ও কামুক ঠোঁটবিশিষ্ট বদমাশ দর্শন তরুণ। আঙুল দিয়ে দাঁড়ি আঁচড়ে বলজিৎকে ওপর নিচ দেখছিল, তার ছাঁটা চুল থেকে পা পর্যন্ত। স্তনের ওপর এসে তার দৃষ্টি থেমে যাচ্ছিল। ‘বিবিজি, আপনি চাইলে আমি আপনার জন্যে ফাতিহা পাঠ করতে পারি। পির সাহেব আপনার মনোবাসনা পূর্ণ করবেন।’ বলজিৎ মাথা ঝাঁকালে খাদেম হাঁটু ভাঁজ করে নিতম্বের নিচে পায়ের গোড়ালি রেখে দুহাত মুখের সামনে তুলে সুর করে বলতে লাগল ; ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম, আল হামদুল্লাহি রাব্বুল আলামিন…।’ সে হাত দিয়ে মুখ মুছে জানতে চাইল, ‘আপনার মনোবাসনা কী, বিবিজি ?’

কোনো দ্বিধা না করে বলজিৎ উত্তর দিল, ‘আওলাদ, যদি পুত্র হয়, তাহলে উত্তম।’
লোকটি পিরের মাজারের দিকে মুখ ঘুরিয়ে বলল, ‘ইয়া পির, সকল মনোকামনা পূরণকারী আল্লাহর কাছে আরজি পেশ করুন এই মহিলাকে একটি পুত্র সন্তান দেয়ার জন্যে।’

বলজিৎ হাতব্যাগ খুলে বিশ টাকার একটি নোট বের করে লোকটির হাতে দিল। খাদেম তাকে অপেক্ষা করতে বলে তার এক রুমের কোয়ার্টারে গিয়ে তবারকের ছোট্ট প্যাকেট হাতে ফিরে আসে। বলজিৎ প্যাকেট দুহাতে গ্রহণ করে যখন চলে যাওয়ার উপক্রম সময় খাদেম তাকে বলে, ‘বিবিজি, আপনার মনোকামনা পূর্ণ করতে চাইলে আল্লাহর রহমতের আশায় আপনাকে দরগায় আসতে হবে। এবং আল্লাহর এই নিঃসঙ্গ গোলামকে একটু সুখী করতে হবে।’ রাজকুমারকে তার দরগায় যাওয়ার ব্যাপারটি জানাল না। এক সপ্তাহ পর বলজিৎ আবার দরগায় গেল। এবার নিজের গাড়ি চালিয়ে গেল। খাদেম তাকে দেখে খুশি হল। সে ফাতিহা পাঠ ও বলজিতকে তবারক দেয়ার রীতি পালন করল। এবার বলজিৎ নজরানা বাড়িয়ে পঞ্চান্ন টাকা দিল এবং যেতে যেতে বলল, ‘আমার মনোকামনা পূর্ণ হলে আরো বেশি দেব।’ তৃতীয় দফায়ও বলজিৎ প্রবল বৃষ্টির মধ্যে নিজেই গাড়ি চালিয়ে দরগায় গেল। গাড়ি থেকে নেমে মাজারে প্রবেশ করার সময় তার জামা কাপড় ভিজে গেল। চিৎকার করে ডাকল, ‘কোঈ হ্যায় ?’ খাদেম উত্তর দিল, ‘আভি আয়া,’ এবং একটু পর চটের বস্তা মাথায় চাপিয়ে এক প্যাকেট তবারক হাতে খোলা মাজার চত্বর দিয়ে দৌড়ে এল। ফাতিহা পাঠ করার জন্যে হাঁটু ভাঁজ করে বসতে বসতে বলল, ‘এই কাদা বৃষ্টির মধ্যে দরগায় আসায় পির সাহেব নিশ্চয়ই আপনার ইচ্ছা পূরণ করবেন।’

ফাতিহা পাঠ করে খাদেম তবারকের প্যাকেট বলজিতের হাতে দিল। সে তাকে একশো টাকার একটি নোট প্রদান করল। ‘বিবিজি, আপনি বরং এখানেই তবারক খেয়ে নিন এবং আপনি চলে যাওয়ার আগে আপনার জামা শুকিয়ে যাক।’ বলজিৎ তবারকের কিছুটা মুখে পুরল। স্বাদ ভিন্নরকম। তার সন্দেহ হল যে, বদমাশটা এতে কিছু মিশিয়েছে। সামান্য পরিমাণে ভাং, বা আফিমও হতে পারে। ব্যাপারটাকে আমলে নিল না সে। তন্দ্রা ভাব এল তার। বিড়বিড় করে উচ্চারণ করল, ‘আমি খুব ক্লান্ত বোধ করছি। আমি কি এখানে শুয়ে পড়তে পারি ?’

‘অবশ্যই শুতে পারেন। কিছু লোক সারা রাত এখানে ঘুমায়।’
মাজারের কাছে শুয়ে বলজিৎ তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ল। একটু পর অনুভব করল খাদেমের হাত তার শরীর স্পর্শ করছে। বেশ সুখকর অনুভূতি। সে বুঝতে পারছে, লোকটির আঙুল তার সালোয়ারের ফিতার গিঁট খুলে সালোয়ার পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত নামিয়ে নিয়েছে। কিছু মনে করল না বলজিৎ। সে টের পেল যে, খাদেম তার কামিজ কাঁধ পর্যন্ত তুলে ব্রা খুলে মুখে পুরে ক্ষুধার্ত ব্যাঘ্র শাবকের মতো স্তন চুষছে। এরপর সে তার ঊরু মর্দন করে খসখসে হাত দিয়ে ঊরু প্রসারিত করল এবং বলজিৎ খাদেমের ভারি দেহ অনুভব করল তার ওপর। আঁধো ঘুমে অনুভব করল, লোকটি তার সালোয়ার কোমর পর্যন্ত টেনে তুলে ফিতায় গিঁট দিয়ে, ব্রা’র হুক লাগিয়ে কামিজ ঠিক করে দিলেও আধ ঘণ্টার আগে বলজিৎ চোখ খুলল না। ‘আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম,’ মিথ্যা বলল সে। ‘আশা করি আমার অপরাধ মার্জনা করা হবে।’

‘আল্লাহ ক্ষমাশীল,’ খাদেম উত্তর দিল। ‘বিবিজি, আশা করি আপনার সাথে আবার সাক্ষাৎ হবে। আপনি যে ইচ্ছা পোষণ করছেন তা পূরণ করতে হলে অনেক দোয়া প্রয়োজন।’ বলজিৎ প্রতিশ্রুতি দিল কয়েক দিনের মধ্যে সে আবার আসবে।

পির সাহেবের কাছে আরো অনুগ্রহ কামনা করল বলজিৎ। মারাত্মক ঝুঁকি নিচ্ছে সে। কিন্তু সে রক্তের স্বাদ পাওয়া বাঘিনীর মতো হয়ে উঠেছে, তার তৃষ্ণা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। এক সপ্তাহ পর সে আবার দরগায় হাজির হল। খাদেম তাকে দেখে একটি বোর্ড বের করে ছোট্ট দরগার দরজায় রেখে দিল। বোর্ডে উর্দু, গুরমুখী, হিন্দি ও ইংরেজি ভাষায় লেখা আছে, ‘খাদেম সাহেব আজ ছুটিতে আছেন। আপনাদের নজরানা বাক্সে রাখুন।’ বলজিতকে অভ্যর্থনা জানাল, ‘বিবিজি, অনের্কদিন পর এ পথে পা রেখেছেন। আমি ভেবেছিলাম, অধম গোলামকে আপনি ভুলেই গেছেন।’

বলজিৎ তার কোয়ার্টারের দিকে তাকে অনুসরণ করল। রুমে একটি মাত্র খাটিয়া, যার ওপর একটি তোশক এবং এক প্রান্তে নোংরা একটি বালিশ। বলজিতকে চারপায়ার ওপর বসতে বলে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করলো এবং একটু পর জানালা দিয়ে ভিতরে এসে জানালাটা বন্ধ করে দিল। কোনো ভূমিকা ছাড়াই বলজিতের পাশে বসে তাকে জড়িয়ে ধরে তার ঠোঁটে ঠোঁট রাখল। তার হাত বলজিতের দুই পায়ের মাঝখানে রেখে ঊরুসন্ধি মর্দন করতে লাগল। সালোয়ারের গিঁট খুলতে ব্যস্ত হয়ে উঠল সে। বলজিৎ তাকে সাহায্য করল গিঁট খুলে সালোয়ার পদপ্রান্তে পতিত হতে। খাদেম পা থেকেও খুলে নিল সালোয়ার। বলজিৎ বুঝতে পারল এবং কামিজ, ব্রা খুলে এক পাশে ছুড়ে দিল। পুরোপুরি নগ্ন সে। দরগাহ শরিফের খাদেম বিস্ময় প্রকাশ করল, ‘সোবহান আল্লাহ ! বেহেশতের হুরিও এমন সুন্দরী হতে পারে না।’ আধ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে তারা সক্রিয় ছিল যতক্ষণ পর্যন্ত না বলজিৎ গোঙাতে শুরু করল। এরপর চরমে উঠল। দ্বিতীয় বার চরমে উঠার পর টের পেল লোকটির উত্তপ্ত বীর্য তার মধ্যে প্রবাহিত হয়েছে।

লোকটি উঠল। বলজিৎ তার নগ্নতা ঢাকার চেষ্টা না করে শুয়ে রইল। নিজেকে ধৌত করে খাদেম এসে তার পাশে শুয়ে পড়ল। সে উপলব্ধি করল, মহিলাটি আরো সুখ পেতে চায়। ঘণ্টা খানেক পর বলজিৎ খাদেমের অঙ্গ নিয়ে খেলতে শুরু করল। আবার চেগিয়ে উঠল সে। দ্বিতীয় বারের মতো তারা সক্রিয় হল। আগের চেয়ে দীর্ঘ সময় স্থায়ী ছিল তাদের যৌনকর্ম। খাদেম দ্রুত কাপড় পরে জানালা খুলে আশেপাশে দেখে কেউ ধারে কাছে নেই নিশ্চিত হয়ে লাফ দিয়ে জানালা পথে বের হয়ে দরজার তালা খুলল। বলজিৎ তার কাপড় পরে হেঁটে গাড়িতে গিয়ে উঠল। আরো কয়েক দফা মাজারে গেল বলজিৎ। শেষ বার সে দরগাহ শরিফে গিয়ে খাদেমের সাথে তার অন্ধকার কক্ষে কয়েক ঘণ্টা কাটাল। চলে আসার আগে সে পির সাহেবের কবরের পাশে বসল খাদেমের সাথে এবং তার ফাতিহা পাঠ করার সাথে সে ক্ষমা প্রার্থনা করল। আর কখনো দরগায় আসবে না বলে শপথ করল সে।

পরবর্তী মাসে তার মাসিক হল না। সে নিশ্চিত হতে পারছিল না যে, আসলেই তার গর্ভ সঞ্চার হয়েছে কিনা। কিন্তু নিশ্চিত হওয়ার জন্যে সে পরপর তিন রাত রাজকুমারের সাথে যৌনকর্মে মিলিত হল। দ্বিতীয় মাসেও তার মাসিক হল না। জানকী একদিন বলজিতের বমি করার শব্দ শনে জানতে চাইলেন, ‘বেটি, তোমার কি সন্তান ধারণ করেছ ?’
গাইনোকোলজিস্ট তাকে পরীক্ষা করে তার গর্ভধারণের কথা ঘোষণা করল। পুত্র লাভের সম্ভাবনায় রাজকুমার রীতিমতো উত্তেজিত। সে আত্মপ্রসাদ লাভ করছে, তার কাছ থেকে যা আকাক্সক্ষা করা হয়েছিল কাজটি সে করেছে। প্রসবের সময় ঘনিয়ে এলে জানকী রীতিমতো অস্থির হয়ে উঠলেন। তার ভয় হচ্ছিল, বলজিতের প্রথম সন্তান যদি কন্যা হয় তাহলে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে? যথাসময়ে, নবম মাসের শেষ দিকে বলজিতের প্রসব বেদনা শুরু হল। রাজকুমার তাকে হাতপাতালে নিয়ে যাওয়ার দুই ঘণ্টা পর সে একটি পুত্র প্রসব করল। বলজিৎ সুখী। দরগাহ শরিফে তার গমন ফলপ্রসূ হয়েছে। রাজকুমার ও জানকী উচ্ছসিত। সবচেয়ে বেশি সুখী দেবীলাল। ঈশ্বর যে যথার্থই ক্ষমাশীল, তাতে তার কোনো সন্দেহ নেই।

২ Comments

  1. নতুন ঢাকা ডাইজেস্ট আমার প্রিয় পত্রিকা। প্রায় সবসংখ্যাই আমার সংগ্রহে ছিল। বাসা বদলের সময় জায়গার অভাবে সংরক্ষন করা আর সম্ভব হয়নি। এজন্য খুব দুঃখ হয় আমার।

Comments are closed.