Category এ মাসের বই

সূর্যের মতো উজ্জ্বল তরবারির মতো শানিত

মূল: অনিতা আমিরেজওয়ানি অনুবাদ: আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু [ইরানের সাফাভি রাজবংশের প্রথম পর্যায়ের ইতিহাসের আলোকে লেখা অনিতা আমিরেজওয়ানির উপন্যাস ‘ইক্যুয়াল অফ দ্যা সান’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ। সাফাভি রাজবংশের (স্থায়িত্ব: ১৫০১-১৭২২) অন্যতম সম্রাট তাহমাস শাহের (১৫১৪-১৫৭৬) কন্যা শাহজাদি পারী খান খানুম ১৫৪৮ সাল থেকে ১৫৭৮ সাল পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। তিনি তাঁর সৎ ভাই ইসমাইল শাহকে বিষয় প্রয়োগে হত্যা করেছিলেন বলে সমসাময়িক ইতিহাসবিদরা উল্লেখ করেছেন। তাঁর মৃত্যুর কয়েক মাস পর পারীকে তাঁর সৎ ভাই মোহাম্মদ শাহ ও তাঁর স্ত্রী মাহদ-এ-ওলিয়া’র আদেশে হত্যা করা হয়। পারীর মৃত্যুর পর মাহদ-এ-ওলিয়া ইরানের কার্যত শাসকে পরিণত হন এবং দেড় বছর পর তিনিও নিহত হন। ] শাহজাদি পারী খানম চৌদ্দ বছর বয়সেই তেজস্বী, উদারতার গুণসম্পন্ন হওয়ার পাশাপাশি তীরন্দাজীসহ যুদ্ধবিদ্যায় পারদর্শী হয়ে ওঠেছিলেন। তিনি ইরান শাহের বিশ্বস্ত পরামর্শকে পরিণত হন। তাঁর মাঝে কবি প্রতিভাও ছিল, কথার জাদুতে তিনি সকলকে মুগ্ধ করতে পারতেন। মহান এক রাজবংশে তাঁর জন্ম, যে বংশে বহু সাহসী নারীর জন্ম হয়েছে। তাঁর দাদি তাজলু খানুম মোসেলু, তাঁর দশ বছর বয়সী পুত্র তাহমাসকে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত করতে ভূমিকা রেখেছেন এবং ফুফু মাহিন বানু আমৃত্যু শাহ আহমাসকে পরামর্শ দিয়েছেন। চৌদ্দ বছর বয়সে পারী তাঁর ফুফুর স্থলে পিতা তাহমাসকে পরামর্শ দেওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেন এবং পরবর্তী চৌদ্দ বছরে পিতার মৃত্যু পর্যন্ত তাঁর উপদেষ্টার দায়িত্ব পালন করেন তাঁর সকল সৎমাকে পেছনে ফেলে। পারীর তৎপরতা তাঁর বংশের সকল নারীর ভূমিকাকে ম্লান করে দিয়েছিল, কারণ তাঁর সাহসিকতার সীমা পরিসীমা ছিল না। শাহজাদি পরীর…

যেদিন নেতাকে হত্যা করা হয়

নাগিব মাহফুজ অনুবাদ: আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু [নাগিব মাহফুজ: আরবি সাহিত্যে একমাত্র নোবেল বিজয়ী নাগিব মাহফুজ আরব জগতে শীর্ষস্থানীয় সাহিত্যিক। ১৯১১ সালে তিনি মিশরের রাজধানী কায়রোতে জন্মগ্রহণ করেন। সতেরো বছর বয়স থেকে তিনি লেখালেখি শুরু করেন। তিনি উচ্চতর শিক্ষা গ্রহণ করেছেন দর্শন শাস্ত্রে। ১৯৩৪ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত তিনি সরকারি চাকুরিতে নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৩৯ সালে তাঁর প্রথম উপন্যাস ‘হিকমাহ খুফু (খুফু’স উইজডম) প্রকাশিত হয়। তাঁর ‘কায়রো ট্রিলজি’ সাহিত্যিক হিসেবে তাঁকে বিশ্বখ্যাতি এনে দেয়। ১৯৮৮ সালে তিনি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। ২০০৬ সালে তিনি ইন্তেকাল করেন।] মুহতাশিমি জায়েদ সামান্য ঘুম হয়েছে। এরপর ভারি চাদরের নিচে উষ্ণতায় ভরা আকাক্সক্ষার মুহূর্ত। জানালা দিয়ে আসা ম্লান আলো রুমের গাঢ় নিষিদ্ধ অন্ধকারকে প্রবলভাবে ভেদ করেছে। হে প্রভু, আমি তোমার আদেশেই নিদ্রা যাই এবং তোমার আদেশেই জাগ্রত হই! তুমিই সবকিছুর মালিক। ফজর নামাজের আজান আমার জন্য একটি নতুন দিন সূচনার ঘোষণা করে। নীরবতার গভীর থেকে ডাকা হয় তোমার নাম। হে প্রভু, আমাকে সাহায্য করো, যাতে আমি আমার উষ্ণ শয্যা থেকে নিজেকে ছিন্ন করতে এবং এই দীর্ঘ শীতের কনকনে শীতলতার মুখোমুখি হতে পারি! আমার প্রিয়জন অন্য বিছানায় গভীর নিদ্রায় ডুবে আছে। অন্ধকারে আস্তে পা ফেলবো যাতে সে জেগে না ওঠে। ওজুর পানি কী ঠাণ্ডা! কিন্তু তোমার অনুগ্রহ থেকে আমি উষ্ণতা আহরণ করেছি। নামাজ হচ্ছে মিলন এবং নির্বাণ। আল্লাহ তাদের ভালোবাসেন, যারা তাঁর সঙ্গে মিলিত হতে ভালোবাসে। যেদিন আমি আল্লাহর নিকটতর হতে না পারি, সেদিন আমার জন্য অনুগ্রহের…