Category ভ্রমণ কাহিনি

কারাউইন : পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়

হাবিব রহমান কিছু কিছু দেশ তাদের নিজস্ব কিছু বৈশিষ্ট্য নিয়ে গর্ব করে। যেমন – নেপাল গর্ব করে পৃথিবীর সর্বোচ্চ চূড়া এভারেস্ট নিয়ে। যুক্তরাজ্য গর্ব করে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ব্রিটিশ মিউজিয়াম নিয়ে। সৌদি আরব গর্ব করে জনসংখ্যার তুলনায় আয়তনে বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র হিসেবে। আর উত্তর আফ্রিকার মুসলিম প্রধান দেশ মরক্কো গর্ব করে পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে। বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবিদার অনেক দেশ। যেমন – চীনাদের দাবি সাংহাইয়ের হাইয়ার স্কুল-ই পৃথিবীর প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয়, যা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে খ্রিস্টপূর্ব ২২৫৭ সালে। পাকিস্তানের দাবি রাজধানী ইসলামাবাদ থেকে ৩২ কিলোমিটার দূরে তক্ষশিলা বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের প্রথম। ভারতীয়দের দাবি বিশ্বের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ছিল বিহারের নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য দলিলদস্তাবেজ পরীক্ষা করে, গিনেস বুকের রেকর্ড অনুসারে মরক্কার ফেজ নগরীর কারাউইন বিশ্ববিদ্যালয়ই পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। জাতিসংঘের শিক্ষা বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি সংস্থা ইউনেস্কো-ও এই ধারণাকেই স্বীকৃতি দিয়েছে। আমার বিশ্ব ভ্রমণের তালিকায় প্রথম দ্রষ্টব্য থাকে ইউনেস্কোর ঐতিহ্যভুক্ত স্থান। তারা অনেক গবেষণা করে বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে এসব স্থানগুলোর স্বীকৃতি দেয়। তাই মরক্কো ভ্রমণের তালিকায় তানজিয়ার এবং ক্যাসাব্লাঙ্কা পরিদর্শনের পর এই দেশটিতে আমার গন্তব্যস্থল ছিল ফেজ নগরী। শুধু পৃথিবীর প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় দেখাই নয়, এটি একাধারে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম শহর। হ্যান্ডিক্র্যাফটস ক্যাপিটাল হিসেবেও রয়েছে এর সুনাম। ফেজ নগরীর প্রধান আকর্ষণ চতুর্দিকে দেয়াল ঘেরা বাজার যা মেদিনা নামে পরিচিত। তাছাড়া লাল টুপি, ফেজ টুপি বা রুমি টুপির ইতিহাস-ও দেশটির সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ক্যাসাব্লাঙ্কা থেকে ফেজ নগরীর দূরত্ব ১৫৩ মাইল বা ২৪৬ কিলোমিটার। খোঁজ নিয়ে…

প্র্যাটসভিলে দুই দিন দুই রাত

আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু ইংরেজি ‘রিট্রিট (Retreat) শব্দটির বহুবিধ অর্থ রয়েছে। দুশমন বাহিনীর প্রচণ্ড হামলা প্রতিরোধ করতে ব্যর্থ হয়ে বা পরাজিত হয়ে অগ্রবর্তী অবস্থান প্রত্যাহার করাকে সামরিক পরিভাষায় ‘রিট্রিট’ বলা হয়। সোজা কথায় ‘পিছু হটা’। বিউগল বাজিয়ে সামরিক-পতাকা নামানোর অনুষ্ঠানও ‘রিট্রিট’। কোনোকিছুর একটি অবস্থানে পৌঁছার পর তা হ্রাস পাওয়ার প্রক্রিয়াকেও ‘রিট্রিট’ বলে। যেমন; হিমবাহের গলে যাওয়ার প্রক্রিয়া। ‘রিট্রিট’ এর আরেকটি বহুল ব্যবহার রয়েছে নীরব, নির্জন স্থানে একান্তে অবকাশ যাপন বোঝাতে। বড় বড় দেশ, বিশেষ করে ক্ষমতাধর দেশসমূহের রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানরা বড় কোনো কর্ম সম্পাদন করে অথবা না করার পর একটু আরাম করার উদ্দেশে দূরে কোনো রাষ্ট্রীয় অবকাশ কেন্দ্রে চলে যান, সেটিও ‘রিট্রিট’। কোনো গুরুর নির্দেশানুযায়ী প্রার্থনা, ধ্যান বা অভিনিবেশ সহকারে পড়াশোনার উদ্দেশে বেশ কিছু সময়ের জন্য জনারন্য থেকে বিচ্ছিন্ন স্থানে দলবদ্ধ অবস্থানও ‘রিট্রিট’। ওপরের সংজ্ঞাগুলো অনুযায়ী নিউইয়র্ক সিটির কোলাহল, যানবাহন ও মানুষের ভিড় ছেড়ে দলবেঁধে পর্বত, বৃক্ষসারি, অচেনা পাখির ডাক, ঝরনা, জলপ্রপাতে পানির আছড়ে পড়ার শব্দের মাঝে কাটাতে যাওয়াকে ‘রিট্রিট’ বলা যাবে না। আমরা দল বেঁধে ঘুরতে গেছি, যেসব দৃশ্য নয়নপথের পথিক হয়েছে, সেগুলো দেখেছি। প্রকৃতি কত সুন্দর ঘুরে না দেখে ছবি ও ভিডিও দেখে তা পুরোপুরি ঝোঝার উপায় নেই। পর্বতের ওপর থেকে অনেক নিচে পানির আছড়ে পড়া এক ধরনের সৌন্দর্য, হেমন্তে গাছের পাতার রঙ বদলে যাওয়া ও শীত জাঁকিয়ে বসার আগে গাছ থেকে সারাক্ষণ ঝরে পড়ার মধ্যে আরেক ধরনের সৌন্দর্য। সৃষ্টিকর্তা যে বিস্ময়কর অনুগ্রহে মানুষকে ধন্য করেছেন, তা হচ্ছে…