ফেরাউনের আমলা আর বাংলাদেশের আমলা

ডা. জাহেদ উর রহমান

আমলা প্রসঙ্গে ফেরাউনের কথা আমাদের সামনে এনেছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী, মনে আছে আমাদের? মন্ত্রীর এই উক্তি প্রসঙ্গে আলোচনায় আসবো কলামের শেষদিকে। আমলাদের প্রসঙ্গে তার উক্তি মাথায় এলো কারণ, সাম্প্রতিক সময়ে আমলারা নানা কারণে আলোচনায় আসছেন, আলোচনায় থাকছেন।

৪৩ কোটি টাকা দিয়ে দু’টি বাড়ি তৈরি করার প্রস্তাব সার দেশে অকল্পনীয় রকম সাড়া ফেলেছিল। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর বারংবার দেয়া দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাসকে সামনে রেখে বাড়ি দু’টির যে বর্ণনা আমাদের সামনে এসেছে, সেটাকে ছোটখাটো প্রাসাদ বলাই যায়। না, আমার এই কলামে এই প্রসঙ্গ নিয়ে আলাপ করছি না। প্রসঙ্গটি নিয়ে নানা বিশ্লেষণ এবং মতামত প্রকাশিত হয়েছে নানা পত্রিকায়।

আমি বরং এই বাহানায় গত বেশ কয়েক বছরে মূলত প্রশাসনের আমলাদের কিছু প্রবণতা এবং তাদের বিষয়ে রাজনৈতিক সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলাপ করতে চাই।

বছর দেড়েক আগে বেশ হাঁকডাক করে ৫০টি মডেল মসজিদ উদ্বোধন করা হয়েছিল। এই রকম মসজিদ নির্মাণ করা হবে সর্বমোট ৫৬০টি। মসজিদগুলো নির্মিত হচ্ছে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের তত্ত্বাবধানে। সে সময়ে এগুলো পরিচালনার জন্য ‘মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সংস্কৃতি কেন্দ্র পরিচালনা নীতিমালা-২০২১’ তৈরি করা হয়। এতে দেখা যায় উপজেলা, জেলা পর্যায়ে অবস্থান অনুযায়ী মসজিদ পরিচালনা কমিটির প্রধান হবেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসক। তারাই মসজিদ পরিচালনা করবেন এবং তারাই মসজিদের জনবল নিয়োগ দেবেন।

এই সিদ্ধান্তে তখন তীব্র নাখোশ  হয়েছিল ইসলামিক ফাউন্ডেশন। স্বভাবতই সংস্থাটির লোকজন ভেবেছিলেন মসজিদগুলোর পরিচালনার দায়িত্ব তারাই পেতে যাচ্ছেন। তারা দাবি করেছিলেন দেশের প্রতি জেলায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অফিসের পাশাপাশি কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছেন। ইসলামিক মিশন, প্রকাশনা, ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমি, মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে ফাউন্ডেশনের বিভাগীয় ও জেলা অফিসেও। খুব স্বাভাবিক কাণ্ডজ্ঞান বলে দেশে একটা বিশেষায়িত প্রতিষ্ঠান থাকার পরও এই মসজিদগুলোর পরিচালনা আমলাদের হাতে যাওয়ার কোনো প্রয়োজন ছিল না।

গত বছরই দেশের প্রথম শ্রেণির পৌরসভাগুলোতে প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল সরকার। প্রজ্ঞাপনের সঙ্গে সঙ্গেই মেহেরপুর ও কক্সবাজার পৌরসভায় সরকারের সহকারী কমিশনার পদের দুই কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল প্রাথমিকভাবে। পর্যায়ক্রমে দেশের ৩২৮ পৌরসভার মধ্যে ১৯৪টি ‘ক’ শ্রেণির পৌরসভায় প্রধান নির্বাহী পদে প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের দায়িত্ব দেয়ার পথে ধাপে ধাপে এগিয়ে যায় সরকার।

এই পদক্ষেপের ব্যাখ্যায় স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বলেছিল প্রধান নির্বাহী না থাকায় পৌরসভার আয় বাড়ানোসহ প্রশাসনিক কাজে বিঘ্ন হচ্ছিল। পৌরসভার কার্যক্রমকে শৃঙ্খলায় আনতে প্রধান নির্বাহী নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এমনিতেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঠিকমতো বেতন দিতে না পারা পৌরসভাগুলো নতুন দুশ্চিন্তায় পড়েছে এই সিইওদের বেতন নিয়ে। বলাবাহুল্য তার চাইতে আরও বড় দুশ্চিন্তা হিসেবে হাজির হয়েছে পৌরসভায় সরকারের আমলাদের সরাসরি খবরদারি। 

যুক্ত করা যাক আরও একটি ঘটনা। নজিরবিহীনভাবে দেশে অন্তত দু’টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার পদে সরকারি আমলাকে পদায়ন করা হয়েছিল গত বছর। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক সকলের আপত্তির পরও এমন পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। 
আমলাদের সবকিছু করতে চাওয়ার প্রকাশ্যে উষ্মা প্রকাশ করেছেন এমনকি সরকারদলীয় লোকজন‌ও। করোনার সময়ে ত্রাণ বিতরণের ক্ষেত্রে জেলাগুলোতে সমন্বয়ের দায়িত্ব সচিবদের দেয়া নিয়ে ক্ষমতাসীন দলের অনেক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এরপর সংসদে সরকারদলীয় অত্যন্ত প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ এবং সংসদ সদস্য জনাব তোফায়েল আহমেদ স্পষ্টভাষায় এর তীব্র সমালোচনা করেছেন। করেছেন আরও কিছু সংসদ সদস্য‌ও। তাদের ক্ষোভ অযৌক্তিক নয়, একজন রাজনৈতিক নেতা এই সমাজের জনগণের সঙ্গে অনেক বেশি সংযুক্ত থাকেন। তাই সেই দায়িত্ব রাজনৈতিক নেতার হাতে থাকা যৌক্তিক। কিন্তু আমরা এই প্রশ্ন করতেই পারি, অন্য সময় আমলাদের এমন ‘অনধিকার প্রবেশ’ নিয়ে নিশ্চুপ থাকা এমপিরা তাদের সঙ্গে সরাসরি স্বার্থের সংঘাত হয়েছে বলেই কি তখন তারা সরব হয়েছিলেন?

করোনার সময় স্বাস্থ্য বিভাগের একটি নিয়োগ নিয়ে এমনকি সরকারদলীয় চিকিৎসক সংগঠন স্বাচিপও খুব তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। সেন্ট্রাল মেডিকেল স্টোরস ডিপো (সিএমএসডি) এর পরিচালক হিসেবে ইতিহাসে প্রথম প্রশাসনিক আমলা (ডাক্তার নন) নিয়োগ করা হয়েছিল। 
এই ঘটনাগুলো খুব সাম্প্রতিক সময়ের, কিন্তু এই দেশে দীর্ঘ সময় থেকে আমলারা এমন সব জায়গায় তাদের প্রভাব বিস্তার করার চেষ্টা করেছেন যেটা তাদের কার্যপরিধির মধ্যে পড়ার কোনো কারণ নেই। আরেকটা কিছুটা পুরনো কিন্তু অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় দেখে নেয়া যাক। 

উপজেলা পরিষদ আইনে উপজেলাকে ‘প্রশাসনিক একাংশ’ ঘোষণা করা হয়েছে, যার প্রশাসনিক কাঠামো নির্বাচিত উপজেলা পরিষদ। উপজেলা পরিষদ আইনের তৃতীয় তফসিলে ১২টি মন্ত্রণালয়ের উপজেলাধীন ১৭টি বিভাগকে উপজেলা পরিষদের কাছে কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের কার্যাবলীসহ হস্তান্তর করা হয়েছে। কিন্তু আইনকে বিবেচনায় না নিয়ে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তর বিভিন্ন সময়ে পরিপত্র জারি করছে। যার মাধ্যমে উপজেলার সব বিভাগের কার্যাবলী নিষ্পত্তির জন্য গঠিত প্রায় শতভাগ কমিটিতে ইউএনওকে সভাপতি করা হয়েছে। এই ১৭টি বিভাগের আয়ন-ব্যয়ন কর্মকর্তাও ইউএনও। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের অনুমোদন ছাড়া সব কাজ কমিটি প্রধানের ক্ষমতাবলে ইউএনও নিয়ন্ত্রণ করছেন।
দেশের নির্বাচন ব্যবস্থা বলে কিছুর আর অস্তিত্ব নেই। এই ব্যবস্থায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং পৌরসভার মেয়র নির্বাচিত হচ্ছেন আওয়ামী লীগের নেতারাই। এমনকি নিজ দলের লোকজনকেও ক্ষমতায়িত করতেও এতটা আপত্তি সরকারের? কিংবা সরকারের রাজনৈতিক নেতৃত্ব কি বাধ্য হচ্ছে আমলাতন্ত্রের দাবি মেনে নিতে?

এই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সংবিধানের রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি অংশের ১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ‘প্রশাসনের সকল পর্যায়ে নির্বাচিত প্রতিনিধদের মাধ্যমে জনগণের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত হইবে’। এর সঙ্গে আমরা যদি স্থানীয় শাসন বিষয়ক অনুচ্ছেদ ৫৯ পড়ি তাহলে দেখতে পাবো বাংলাদেশের সংবিধান চেয়েছে ‘নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠানসমূহের উপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা’ এবং তাদের হাতে ‘প্রশাসন ও সরকারি কর্মচারীদের কার্য, জনশৃঙ্খলা রক্ষা, জনসাধারণের কার্য ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কিত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্কবায়ন’ এর দায়িত্ব থাকবে। 
খুব সহজভাবে বলতে গেলে এটুকু আমরা বুঝি ইউএনওসহ সব সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী উপজেলা চেয়ারম্যানের অধীনস্থ হিসেবে কাজ করবেন। অথচ উপজেলার সব কাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে গঠিত কমিটির প্রায় শতভাগ ক্ষেত্রে ইউএনও সভাপতি। উপজেলা আইনে একজন নির্বাচিত প্রতিনিধিকে ইউএনও’র অধীনস্থ করা হয়েছে। 

এটা নিয়ে হাইকোর্টে যাওয়া হয়েছে। হাইকোর্ট উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এর পক্ষে রায় দিয়েছেন কিন্তু সেটাও কার্যকর করতে বারবার গড়িমসি করা হয়েছে। সরকারের দিক থেকে আপিল করা হয়েছে।
প্রশাসনের আমলারা শুধু প্রশাসনিক একাংশ এর নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছেন তা নয়। তারা চান দেশের একেবারে ভিন্ন একটা অঙ্গ বিচার বিভাগের হয়ে দায়িত্ব পালন করতেও। হাইকোর্ট কর্তৃক অবৈধ ঘোষিত প্রশাসনিক আমলা দ্বারা পরিচালিত মোবাইল কোর্ট আপিলের মাধ্যমে স্থগিত করিয়ে চলছে এখনো। শুধু সেটা নয় বর্তমানে দেশে পাস হওয়া প্রতিটি আইন যেখানে ফৌজদারি অপরাধ আছে সেখানে মোবাইল কোর্টকে যুক্ত করা হচ্ছে।

ওদিকে ‘সরকারি চাকরি আইন- ২০১৮’ এর ৪১ (১) ধারাটি (কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়েরকৃত ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেপ্তার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে) সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে বাতিল ঘোষণা করেছিল হাইকোর্ট বিভাগ, কিন্তু সরকার যথারীতি আপিল করেছে বলে সেই রায় আপাতত স্থগিত আছে। অর্থাৎ আপনাকে আমাকে যেকোনো ফৌজদারি অপরাধের জন্য প্রয়োজন মনে করলে পুলিশ সরাসরি গ্রেপ্তার করতে পারলেও আমলাদের জন্য নিতে হবে ‘সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি’। 

প্রশ্ন হচ্ছে, এই দেশের আর সব ক্ষেত্রের মানুষরা অদক্ষ, অযোগ্য এবং অসৎ কিন্তু সরকারি আমলাদের (বিশেষ করে প্রশাসনিক) দক্ষতা, যোগ্যতা আর সততার অসাধারণ সুনাম আছে আমাদের সমাজে? এই রাষ্ট্রের জনগণ কি আদৌ মনে করে এই দেশকে পুরোপুরি এই আমলাদের হাতে ছেড়ে দিয়ে চালালে দেশ তুলনামূলকভাবে ভালো চলবে? মোটেও না, আমরা এই দেশে যারা বসবাস করি তারা জানি আমাদের এই প্রশাসনও যেকোনো বিবেচনায়‌ ভালো কিছু নয়। এই দেশের চেহারা দেখলে যে কেউই খুব সহজেই বুঝে যাবেন এদেশের আমলাতন্ত্রের আসল অবস্থা। তাত্ত্বিকভাবে যদি ধরেও নেই তারা অসাধারণ যোগ্য এবং সৎ, তবুও কি তাদের হাতে সব দায়িত্ব ছেড়ে দিতে হবে?

এটুকু জ্ঞান আমাদের আছে, একটা আধুনিক রাষ্ট্রে সরকারি আমলাতন্ত্র থাকবেই। একটা সৎ, দক্ষ আমলাতন্ত্র রাষ্ট্র পরিচালনাকে অনেক সহজ করে তোলে। কিন্তু সরকার মানেই সরকারি আমলাতন্ত্র নয়। এতে থাকবে নানা রকম স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান, থাকবে অনেক নির্বাচিত স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান‌ও। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের নির্দিষ্ট কার্যপরিধি থাকবে এবং তারা নিজেদের মতো করে নিজস্ব পরিচালনা-পদ্ধতি ঠিক করবে। কখনো কোনো ক্ষেত্রে কোনো প্রতিষ্ঠানা যদি ব্যবস্থাপনাগত সংকট দেখা দেয়, প্রয়োজনে সেসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং কর্মীদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে, প্রতিষ্ঠানের কাঠামোগত পরিবর্তন আনতে হবে। কিন্তু যেকোনো প্রতিষ্ঠানের কোনো দুর্বলতা বা অন্য কোনো সমস্যার অভিযোগ তুলে সেখানে সরকারি আমলাকে পদায়ন করা কোনোভাবেই সঠিক সমাধান নয়। 

সাম্প্রতিককালে আমলাদের নিয়ে নানা ধরনের সমালোচনা বোধ করি সাবেক আমলা পরিকল্পনামন্ত্রীর অহমে আঘাত করেছিল। তখন তিনি আমলাদের অপরিহার্যতা বোঝাতে গিয়ে বলেছিলেন, এমনকি ফেরাউনও নাকি আমলা ছাড়া চলতে পারেনি। পরিকল্পনামন্ত্রী ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছেন- ফেরাউনেরই বরং আমলার প্রয়োজন অনেক বেশি। ফেরাউন তো ঈশ্বর ছিলেন না, মনে ইচ্ছে করলেই সবকিছু হয়ে যেতো না। ফেরাউন হোক বা অন্য যেকোন সম্রাট হোক তাকে রাজ্য চালাতে হতো আমলাদের মাধ্যমেই। কারণ সেসব রাজ্যে সেপারেশন অফ পাওয়ার্স থাকে না, রাষ্ট্র নানা অঙ্গে বিভক্ত থাকে না, রাষ্ট্রে নানা সাংবিধানিক কিংবা বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান থাকে না, থাকে না রাষ্ট্রের বিভিন্ন স্তরে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে স্থানীয় শাসন/সরকার।