সাদি মোহাম্মদের আত্মহনন ও বিষন্নতা
শিল্পী সাদি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেইন মঞ্জু খ্যাতি, অর্জন ও আকাশচুম্বি জনপ্রিয়তাসত্বেও বিষন্নতা যে মানুষকে চরম পরিণতির দিকে ঠেলে দিতে পারে, তার প্রমাণ খ্যাতিমান রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী সাদি মোহাম্মদের আত্মহননের ঘটনা। বিশ্বে বহু সফল ব্যক্তি বিষন্নতার কারণে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। নোবেল পুরস্কার লাভ করেও আমেরিকান ঔপন্যাসিক আর্নেস্ট হেমিংওয়ের বিষন্নতা কাটেনি। মাথায় গুলি করে মরে গেছেন। ইংলিশ কবি ভার্জিনিয়া ওলফ বিষন্নতার শিকার হয়েছিলেন এবং সুইসাইড নোট লিখে পানিতে ডুবে মারা গেছেন। ফ্রাঞ্জ কাফকা বহুবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। তিনি তার চিকিৎসককে পর্যন্ত বলেছিলেন, তাকে আফিমের ওভারডোজ দিতে, যাতে তিনি তার মৃত্যু নিশ্চিত করতে পারেন। লিও টলস্টয় সম্পর্কেও বলা হয় যে তিনি জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন। কিন্তু আত্মহত্যা করতে ভীত ছিলেন। জাপানের খ্যাতনামা ঔপন্যাসিক ইওকিও মিশিমা আত্মহত্যা করেছেন। আমি সঙ্গীত প্রেমিক হলেও বলতে দ্বিধা নেই যে আমি বাংলা গান কমই শুনি। এই কম শোনার মধ্যেও সাদি মোহাম্মদের কণ্ঠে অনেক রবীন্দ্র সঙ্গীত শুনেছি। গানের মধ্যে তার যে মগ্নতা থাকতো, যে কারণে মনে হতো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বুঝি গানগুলো তার জন্যই লিখেছেন। শেষ পর্যন্ত সঙ্গীতে মগ্নতাও সাদি মোহাম্মদের বিষন্নতায় তাকে আশ্রয় দেয়নি। সঙ্গীতের প্রতি তার প্রেম ও আবেগজাত যে আস্থা ছিল, সে আস্থাও তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। কেউ বিষন্ন হয়ে পড়লে তা যদি তার প্রিয়ভাজনদের কাছে স্পষ্ট হয়ে উঠে, তাহলে সেক্ষেত্রে তার উপযুক্ত চিকিৎসা ও পরিচর্যা এবং তাকে সঙ্গ দেওয়া জরুরী ছিল। সাদি মোহাম্মদের ক্ষেত্রে নি:সন্দেহে এসবের ব্যত্যয় ঘটেছে। ফলে তিনি জীবনকে আর উপভোগ্য বিবেচনা…