আমার রাজনৈতিক চেতনা
আমি রাজনীতিবিদ নই, কিন্তু আমি আপাদমস্তক রাজনৈতিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ। স্কুলে পড়াশোনার সময় থেকে আমার মাঝে এ চেতনার উন্মেষ ঘটেছে। পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠীর দু:শাসন দেখে দেখে যখন যৌবনে পা দিয়েছি, তখন জাতীয়তাবোধের চেতনা আমাকে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে সম্মুখ যুদ্ধে লড়তে নিয়ে গেছে রণাঙ্গনে। হ্যাঁ, অসম সাহসে ভর দিয়ে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছি। দেশকে হানাদার বাহিনীর কবল থেকে মুক্ত করার সশস্ত্র সংগ্রামে শরীক আমার অনেক সহযোদ্ধা শাহাদাত বরণ করেছে। তাদের এ আত্মত্যাগ ব্যর্থ হয়নি। আমরা নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে অর্জন করেছি স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। পৃথিবীর দেশে দেশে আজ উড়তে থাকা লাল-সবুজ পতাকা একজন মুক্তিযোদ্ধা ও দেশপ্রেমিক হিসেবে আমাকে গর্বিত করে। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ ইতোমধ্যে অর্ধশত বছর অতিক্রম করেছে। কিন্তু ফেলে আসা পঞ্চাশ বছরেও কি আমরা আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ও চেতনা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছি? সামগ্রিক মূল্যায়নে একথা স্বীকার করতেই হবে যে আমরা আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে অনেক দূরে সরে গেছি। আজ বিদেশি শাসকরা দেশ শাসন না করলেও যে রাজনৈতিক দলগুলোর শিখণ্ডিরা বাংলাদেশকে শাসন করছেন, তাদের আচার আচরণই প্রমাণ করে যে তারা দেশ শাসন করেন নিজেদেরকে জমিদার এবং জনগণকে প্রজা ভেবে। ক্ষমতার মোহে তারা জনগণকে তোয়াক্কা করেন না, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য তারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে প্রহসনের বিষয়বস্তুতে পরিণত করেন। রাজনীতিবিদদের এ মানসিকতা নতুন কিছু নয়। পাকিস্তান আমলে ক্ষমতার ভাগাভাগি নিয়ে যখন দেনদরবার চলছিল তখনো তারা তাদের ক্ষমতার জন্য যতটা প্রয়োজন ততটুকু গ্রহণ করে পাকিস্তানি হানাদারের সঙ্গে আপস করে নিরাপদ দূরত্ব বজায়…